স্বাগতম নতুন জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান, বিদায় তন্ময় দাস
নোয়াখালীবাসী ভালোবাসার মাধ্যমে বরণ ও বিদায় জানালেন দুজনকে
গত ২৫ জুন ২০২০ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দেশের ৯ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সরকারের উপ-সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এর মধ্যে নতুন জেলা প্রশাসক পেয়েছে ঢাকা, টাঙ্গাইল, মেহেরপুর, মৌলভীবাজার, যশোর, নোয়াখালী, রাজশাহী, বগুড়া ও মাদারীপুর জেলা। নোয়াখালীতে নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে খোরশেদ আলম খান তিনি চট্টগ্রামের পটিয়ার সন্তান। পিতার নাম মোহাম্মদ শাহ আলম খান আর মাতার নাম শামছুন নাহার।
শিক্ষাজীবন:
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি, পটিয়া সরকারী কলেজ থেকে ১৯৯০ সালে এইচএসসি এবং দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যা বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন।
পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ বেডফোর্ডশায়্যার থেকে ইনফরমেশন সিস্টেম এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেওয়া খোরশেদ ২২তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন গর্বিত সদস্য।
কর্মজীবন:
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্মানিত উপ-সচিব, মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের প্রাণের নোয়াখালীর নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন পেয়েছেন।
খোরশেদ আলম খান এর আগে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও বুড়িচং উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ২০০৩ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, যশোর এ যোগদান করেন। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে তিনি পর্যায়ক্রমে কক্সবাজার সদর, লংগদু-রাঙ্গামাটি, হোমনা-কুমিল্লা এবং চকোরিয়া-কক্সবাজারে সুনামের সাথে দায়িত্বপালন করেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসৈনিক খান দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের উপসচিব ও ডোমেন স্পেশালিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। মূলত তার সুদক্ষ নেতৃত্বেই বর্তমান সময়ে বহুল ব্যবহৃত “ই-নথি সিস্টেম” ডেভেলপমেন্ট হয় এবং পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সহযোগিতায় তার টিম দেশের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তরসহ সর্বমোট প্রায় চার হাজার সরকারি দপ্তরে ই-নথির সফল বাস্তবায়ন করে। সর্বশেষ তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এর একান্ত সচিব হিসেবে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
কর্মজীবনের সকল সেক্টরে সততা এবং সফলতার সাথে দায়িত্বপালন করা খোরশেদ আলম খানের এই পদোন্নতিতে তার নিজ উপজেলা চট্টগ্রামের পটিয়া এবং নিজ গ্রাম কুসুমপুরা ইউনিয়নের মনসা গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এমন একজন পরীক্ষিত ডিজিটাল কর্মকর্তাকে জেলা প্রশাসক হিসেবে পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক আশা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে নোয়াখালী জেলার মানুষও!
আলোকিত চাটখিল পত্রিকার পক্ষ থেকে মুঠোফোনে নোয়াখালীবাসীর উদ্দেশ্যে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কাজের মানুষ, কাজকে ভালোবাসি। নোয়াখালীবাসীর জন্য আমি কাজ করতে চাই, তাই আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সকলে মিলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’
সমগ্র নোয়াখালীবাসী এখন নতুন জেলা প্রশাসকের শুরুটা দেখার অপেক্ষায়!
অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো আলোকিত চাটখিল পরিবারের পক্ষ থেকে।
বিদায় নিলেন তন্ময় দাস
নোয়াখালী জেলার সর্বমহলের মন জয় করেছেন তিনি সেবা এবং উন্নয়ন দিয়ে। নোয়াখালীবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া চার লেন রাস্তার কাজের প্রায় শেষের পথে যা নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাসের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে আজ দৃশ্যমান।
কেবল প্রজাতন্ত্রের একজন একনিষ্ট সেবকই নয় জাতি-ধর্ম, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে সকলের প্রিয়পাত্র সদা হাস্যজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস।
তিনি ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর নোয়াখালী জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে জনস্বার্থ সংরক্ষণ, জনসেবা নিশ্চিতকরণ, সরকারি সেবা গ্রহণে জনভোগান্তি ও হয়রানি রোধ, সরকারি কর্মকাণ্ডে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো ও নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারি পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পৃষ্টপোষকতা, ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিজিটাইলেজেশন, সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, ভূমি দখলদারিত্বের হাত থেকে সরকারি ভূমি উদ্ধার, সরকারি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া, সেবার মান উন্নতকরণ নিশ্চিত করা, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ, নকল ঔষধ জব্দ, বিভিন্ন উৎসবসহ যে কোন সময়ে যাত্রী হয়রানি বন্ধ, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয় বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখাসহ জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অদ্যবধি পর্যন্ত নিরলস কাজ করে গিয়েছেন।
জেলার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ‘দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালন’ নৈতিকতার কারণে জেলার দুঃস্থ ও অসহায় মানুষসহ সকলের প্রাণ পুরুষ তিনি। যা কেবল এই লেখনীর মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, তিনি এখন যুগ্ম-সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। যাকে নোয়াখালীবাসী আন্তরিকতার সাথে শুভেচ্ছার মাধ্যমে বিদায় জানান।
বিদায়ী জেলা প্রশাসক বলেছেন তন্ময় দাস বলেছেন, আমি সচিবালয়ে গেলেও নোয়াখালী জনগণের জন্য কাজ করে যাব। আর অনুজকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করব।
Comments are closed.