বহুতল ভবনে অগ্নিনিরাপত্তায় যা থাকা প্রয়োজন

133

আদর্শ ও গ্রহণযোগ্য অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে যা বোঝায় তা নেই রাজধানীর অধিকাংশ বহুতল ভবনে। ফায়ার সার্ভিস বহুতল ভবনের ব্যবহার ও তলা অনুযায়ী কিছু নিয়ম করে দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এসব নিয়ম মানা হলে জানমালের ক্ষতি এড়ানো যাবে। এ জন্য ভবন মালিকদের আরও আন্তরিক ও বাস্তববাদী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বহুতল ভবনের অগ্নিনিরাপত্তায় ভবনের ধরন, আয়তন, উচ্চতা ও ব্যবহারে দিক বিবেচনা করে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে ফায়ার সার্ভিস। সেই অনুসারে অগ্নিনির্বাপণের সরঞ্জাম ব্যবহার করলে বহুতল ভবন নিরাপদ থাকবে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিরাপত্তার বিষয়গুলো হলো—

বেজমেন্ট ফ্লোর প্ল্যান: বেজমেন্টে অবশ্যই পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন থাকতে হবে, যাতে বাতাস যাওয়া-আসা করতে পারে। কার পার্কিং করা ছাড়া অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যেমন, স্টোররুম বা গোডাউন হিসেবে বেজমেন্ট ব্যবহার করা যাবে না। তবে ভবনে পাম্পরুম রাখা যাবে। এছাড়া বেজমেন্টে জেনারেটর, সুইচগিয়ার রুম, সাবস্টেশন, বয়লার রুম কোনোভাবেই রাখা যাবে না। এদিকে, ভবনের বেজমেন্ট রাম্পের স্লোপ (ঢালু রাস্তা) অবশ্যই ১:৮ রাখতে হবে। বেজমেন্টের প্রতি ২০ মিটার পর পর সিঁড়ি রাখতে হবে। যদি ভবনের বেজমেন্ট ফ্লোর ৭৫০ বর্গমিটারের বেশি হয় তবে সেখানে সেপারেশনের (বিভাজন) ব্যবস্থা করতে হবে। বেজমেন্টের পর্যাপ্ত আলো এবং প্রতি ১০০ বর্গফুট এলাকার জন্য স্বয়ংক্রিয় স্প্রিংকলার (পানি ছিটানোর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা) রাখতে হবে।

গ্রাউন্ড ফ্লোর প্ল্যান: বহুতল ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে থাকবে জেনারেটর, সুইচগিয়ার, সাবস্টেশন এবং একটি ফায়ার কন্ট্রোলরুম। তবে জেনারেটর, সুইচগিয়ার, সাবস্টেশন ও ফায়ার কন্ট্রোলরুম ৪ ঘণ্টা ফায়ার রেটেড (আগুনে ৪ ঘণ্টা টিকে থাকার মতো) দেওয়াল এবং ২ ঘণ্টা ফায়ার রেটেড দরজা দিয়ে আলাদা রাখতে হবে। রুমের সংখ্যাসহ সেখানে কেভিএ উল্লেখ করতে হবে। এসব রুমের সুরক্ষার জন্য এফএম ২০০ সাপ্রেশন সিস্টেম থাকতে হবে। গ্রাউন্ড ফ্লোরে একটি ফায়ার ব্রিগেড কানেকশন থাকবে, যার ডায়ামিটার হবে ৬৩ মিলিমিটার পর্যন্ত। এছাড়া ভবনের সব সিঁড়ি গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হবে এবং ছাদে গিয়ে শেষ হবে। পুরো সিঁড়ি উন্মুক্ত থাকবে, যাতে যেকোনও দুর্ঘটনায় মানুষ সেটি সহজে ব্যবহার করতে পারে।

অন্যান্য ফ্লোর প্ল্যান: ভবনের সব ফ্লোরে প্রতি এক হাজার বর্গফুট এলাকার জন্য একটি বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (এক্সটিংগুইশার) দেওয়ালে লাগিয়ে রাখতে হবে। যদি ফ্লোরের আয়তন এক হাজার বর্গফুটের বেশি হয় তবে অতিরিক্ত আরও একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখতে হবে। এসব অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র জরুরি বহির্গমনপথে রাখতে হবে। যাতে আগুনের ঘটনার সময় সহজেই সেগুলো কাজে লাগানো যায়। দুই ধরনের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা যায়— Co2 fire extinguisher এবং dry powder fire extinguisher। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরেই স্মোকহিট মাল্টিডিটেক্টর ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাতে আগুনের ধোঁয়া বা তাপ শনাক্ত করতে পারে। প্রতিটি তলার ১০০ বর্গফুটের জন্য একটি স্মোকহিট ডিটেক্টর থাকতে হবে। যদি ১০০ বর্গফুটের বেশি জায়গা হয় তবে একটি স্বয়ংক্রিয় স্প্রিংকলার হেড স্থাপন করতে হবে। এছাড়াও ভবনের প্রতিটি তলাতেই পর্যাপ্ত ইমার্জেন্সি লাইট, স্ট্রোবলাইট, অ্যালার্মবেল, ম্যানুয়াল কলপয়েন্ট, এবং এক্সিট সাইন লাগাতে হবে। যদি ভবনের ফ্লোর দশ হাজার বর্গফুট হয় তবে ওই ফ্লোরে ৩৮ মিলিমিটারের একটি হোজরিল পাইপ কানেকশন থাকতে হবে। ফ্লোরের আয়তন ১০ হাজার বর্গফুটের বেশি হলে অতিরিক্ত আরও একটি হোজরিল পাইপ কানেকশন রাখতে হবে। এছাড়াও ভবনের প্রতিটি তলাতেই ৬৩ মিলিমিটার ডায়াবিশিষ্ট ইন্টারনাল হাইড্রেন্ট কানেকশন রাখতে হবে। যদি আগুন লাগে তবে সেখান থেকে দ্রুত পানির সংযোগ পাওয়া যায়।

ছাদের প্ল্যান: ভবনের ছাদের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য চারপাশেই স্লোপ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হবে। ছাদে বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে (যা ছাদের ২০ ফুট পর পর হবে)। যদি ভবনটি ১৫০ ফুটের বেশি উঁচু হয় তবে ছাদে এভিয়েশন লাইট স্থাপন করতে হবে। ছাদে ওভারহেড ওয়াটার রিজার্ভারের পাশাপাশি ভবনের লিফট মেশিনরুমে যাতায়াতের পথপ্রদর্শন দেওয়া থাকতে হবে।

সেফটি লবি: সব ফায়ার লিফটের সঙ্গে ৪ ঘণ্টা ফায়ারওয়াল এবং দুই ঘণ্টা ফায়ার রেটেড ডোর দিয়ে সুরক্ষিত সেফটি লবি থাকবে। সব সেফটি লবি অবশ্যই পজেটিভ এয়ার প্রেসারাইসড হতে হবে।

ভবনের পাম্পরুম: ভবনের পাম্পরুমে একটি মেইন, একটি স্ট্যান্ডবাই এবং জকি পাম্প অবশ্যই রাখতে হবে। ভবনের নকশায় অবশ্যই পাম্প জিপিএম উল্লেখ করতে হবে। তবে পাম্পের সাকশন পজিটিভ থাকতে হবে।

রাইজার ডায়াগ্রাম: যদি বহুতল ভবনটি বাণিজ্যিক হয় তবে ভবনে অবশ্যই স্ট্যান্ডপাইপ রাইজার রাখতে হবে এবং সেটি ভবনের নকশাতেও উল্লেখ করতে হবে। এ ছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ড ওভারহেড ওয়াটার রিজার্ভারের আয়তন ও ক্যাপাসিটি সম্পর্কেও উল্লেখ থাকতে হবে। পাম্প লে-আউট, গ্রাউন্ড ফ্লোরে ফায়ার ব্রিগেড কানেকশন, প্রতিটি ফ্লোরে ৩৮ মিলিমিটার হোজরিল এবং ৬৩ মিলিমিটার ইন্টারনাল হাইড্রেন্ট পয়েন্ট ব্যবস্থা রাখতে হবে।

বয়লার রুম: কোনোভাবেই ভবনে বয়লার রুম রাখা যাবে না। বয়লার রুম করতে হলে ভবনের বাইরে করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বয়লার রুমে অবশ্যই ৪ ঘণ্টা ফায়ার রেটেড আরসিসি দেওয়াল হতে হবে এবং ২ ঘণ্টা ফায়ার রেটেড দরজা দিয়ে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

রাস্তা: ভবনের সামনে রাস্তার প্রশস্ততা ন্যূনতম ৯ মিটার হতে হবে। এছাড়াও ভবনের চারপাশে কমপক্ষে ৪ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত রাস্তা বা জায়গা রাখতে হবে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ওয়্যার হাউজ অ্যান্ড প্রিভেনশন বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বহুতল ভবনসহ সব ভবনে অবশ্যই ফায়ার সেফটি প্ল্যান্ট থাকতে হবে। এবং ভবনে ফায়ার সেফটি প্ল্যান্ট কী কী রাখা হয়েছে, সেটি অবশ্যই ভবনের নকশাতে উল্লেখ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর অধিকাংশ ভবনেই পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। আমরা সেগুলোতে সার্ভে করে চিঠি দিয়ে অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে ফায়ার সেফটি প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য বলেছি। তবে তারা বিষয়গুলো আমলে নেয় না।’

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে বাতাসে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পায় তারা।

চাটখিলে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

বেলায়েত হোসেন আশা করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসায় তিনি বিপুল ভোটে চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

চাটখিলে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত এর মতবিনিময়

নোয়াখালীর চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে চাটখিল উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সাংবাদিক মেহেদী হাছান রুবেল ভুঁইয়া’র পৃষ্ঠপোষকতায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিনি দেশবাসীকে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে কুরআন পাঠের আহ্বান জানান।

সারাদেশে অর্থসহ কুরআন পাঠ দিবস পালিত

Comments are closed.