ফেনীতে পরকীয়ায় ঘর ছাড়ল স্ত্রী, সৌদিতে প্রবাসী স্বামীর মৃত্যু
প্রায় একবছর আগে পরকীয়ার টানে ঘর ছাড়েন সৌদি আরব প্রবাসী আবদুল কাদেরের (৪৫) স্ত্রী। এ খবর পেয়ে সৌদি আরবে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন আবদুল কাদের। পারিবারিক, সামাজিকভাবে অপমানিত হওয়ায় আর দেশে ফেরেননি তিনি।
প্রায় এক বছর পর বুধবার বিকালে জেদ্দায় নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।
নিহত আবদুল কাদের ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মোকামিয়া গ্রামের মরহুম মৌলভী আবদুস সালামের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের জেদ্দায় ট্যাক্সি চালাতেন।
নিহতের রাশেদা আক্তার সুমাইয়া (৭) এবং কাউছার (৫) নামে দুই ছেলে মেয়ে রয়েছে। পাঁচ ভাই চার বোনের মধ্যে কাদের দ্বিতীয়।
নিহতের মামা মো. সেলিম জানান, গত ২৫ এপ্রিল বুধবার দুপুরে আবদুল কাদের তাঁর মায়ের সঙ্গে নিজ এবং পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বিকালেই হার্টঅ্যাটাক করে তিনি মারা যান বলে তার এক বন্ধু বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বেসরকারি মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে আবদুল কাদের প্রায় ১৮ বছর আগে সৌদি আরব যান। ১৪ বছর আগে উপজেলার উত্তর সতর গ্রামের সালেহ আহমদের মেয়ে কহিনুর আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর ৫-৬ বার তিনি দেশে আসা-যাওয়া করেন।
এরই মধ্যে তার স্ত্রী পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাচ্চু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছরের ২২ মে তাঁর স্ত্রী কহিনুর আক্তার সন্তান রেখে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। সেই থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন আবদুল কাদের। তিনি সবসময় মোবাইল ফোনে স্বজনদের কাছে হতাশার কথা ব্যক্ত করতেন। পারিবারিক মানসম্মান এবং অবুঝ সন্তানদের কথা বলে কান্নাকাটি করতেন।
মোকামিয়ার ইউপি সদস্য আবুল হাসেম বলেন, কাদের প্রায় আমাকে ফোন করতেন। বলতেন, স্ত্রী পালিয়ে গেছে – আমি কিভাবে দেশে যাব? এ মুখ কীভাবে আমি মানুষকে দেখাব? ও আমার পরিবারের মান-সম্মান সব শেষ করে দিয়েছে। এসব বলে মারাত্মক টেনশন করতেন। ছেলে মেয়েদের দিকে খেয়াল রাখতে আমাকে অনুরোধ করতেন।
নিহতের মা নুরজাহান বেগম বৃহস্পতিবার ছেলের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমার হুত (পুত্র) টেনশনে মরি গেছে। অপমানে মরি গেছে।’
তিনি জানান, দুপুরেও তাঁর সঙ্গে ছেলের কথা হয়েছে। কিন্তু বিকালে খবর আসে মৃত্যুর। তাঁর ছেলের লাশ দেশে ফেরত আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
Comments are closed.