পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী অথচ মানতে নারাজ এলাকার মানুষ
ফজলুর রহমান মধু (৩৬) নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়ন শ্রীপুর গ্রামের সাব মিয়ার ছেলে।
সমাজকর্মীদের দাবী, শুধু মাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্নতার কারণে রাষ্ট্র তার একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না!
একটি নয়, দু’টি নয়! হত্যা,মাদক মামলা সহ পুলিশের খাতায় মোট ১২ টি মামলার আসামি ফজলুর রহমান মধু (৩৬)
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি বিএনপির অবৈধ সরকার উচ্ছেদ আন্দোলন, নতুন সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের দাবীতে করা আন্দোলন সংগ্রামে স্থানীয় পর্যায়ে অর্থাৎ দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে খিলপাড়া ইউনিয়নে সম্মুখ নেতৃত্ব দেন এই ফজলুর রহমান মধু। চাটখিল উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে তিনি যুবদল নেতা মধু নামেই বেশ পরিচিত।
- পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, এসবগুলো মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বিএনপির যুব সংগঠনের রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়াই কাল হয়েছে তার।
প্রথমে কেউ ভয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলতে না চাইলেও নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেন কেউ-কেউ। পাশের এলাকার আলম মিয়া (৬৭), যার চোঁখের সামনেই পার হয়েছে মধুর শৈশব-কৈশর। তিনি জানান মধু অত্যন্ত মার্জিত, নম্রভদ্র ছেলে।বিএনপির রাজনীতি করতো, তার অনুসারী ছিলো অনেক। সেই কারনে তাকে দমীয়ে রাখতেই প্রথমে মামলা দেয়। কিন্তু মামলার জামিন না নিয়ে আত্মগোপনে থাকে সে। এরপর আশেপাশে কোন ঘটনা ঘটলেই অলৌকিকভাবে মামলায় তার নাম চলে আসতো। আসলে সে জাত সন্ত্রাসী নয়।
আলম মিয়ার মত মোশাররফ হোসেনেরও একই কথা। কেউই অভিযোগ তুলেনি মধুর বিরুদ্ধে। সবার দাবি সন্ত্রাসী নয় রাজনৈতিক পরিচয় ভিন্ন হওয়ার কারনেই এসব মামলা হয়েছে।
৩দিন ধরে চেষ্টা করেও মধুর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কোন তথ্য কিংবা ভুক্তভোগী কাউকেই খুঁজে পায়নি গণমাধ্যম।
এদিকে চাটখিল উপজেলা বিএনপির একাধিক শীর্ষনেতা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মধু ইউনিয়ন যুবদল নেতা। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে সবগুলোই রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন তার বিরুদ্ধে তার এলাকার মানুষ, আশেপাশের মানুষ কি বলে। সে কি আসলে সন্ত্রাসী?
অন্যদিকে পুলিশ বলছে – ফজলুর রহমান মধু সন্ত্রাসী জিসান বাহিনীর সদস্য। পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।
থানায় তার বিরুদ্ধে ৪টি হত্যা ও ৪টি মাদক মামলা সহ মোট ১২ টি মামলা রয়েছে।
সে একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি। সে দীর্ঘদিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। চাটখিল থানার উপ-পরিদর্শক কৃষ্ণ কুমার দাস গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত ফজলুর রহমান মধু (৩৬) নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের সাব মিয়ার ছেলে।
রোববার (২০ জুন) গভীররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তার নানার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার সাথে একটি দেশীয় পাইপ গান উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
পরে তাকে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
তবে সমাজকর্মীদের দাবী, শুধু মাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন কিংবা ভিন্ন মত দমন করতে রাষ্ট্র তার একজন সাধারণ নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। এভাবে কাউকে সন্ত্রাসী হিসেবে সমাজের কাছে পরিচয় করিয়ে দিবে সেটি কোনভাবেই কাম্য নয়৷ এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। সবাই যেন তার নুন্যতম সাংবিধানিক অধিকারটুকু পায় রাষ্ট্রকে আগে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
Comments are closed.