নোয়াখালীতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের বাম্পার ফলন
নোয়াখালী: দেশব্যাপী খরা মৌসুমে প্রচণ্ড গরম আর তাপদাহে একটুখানি তৃপ্তি মেটাতে এবং মাহে রমজানের ইফতারিতে গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুরেজ চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার এই দুই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়ীরাও চড়া দাম হাকাচ্ছেন। কোথাও কোথাও আবার কেজিতেও তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
চাহিদার সঙ্গে বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরাও আগাম তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সেই সাথে সরকারি প্রণোদনা ও কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আগাম তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। খরচের তুলনায় অধিক মূল্য পেয়ে কৃষকরা আনন্দিত।
জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন এনএফএলসিসি প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় প্রায় ২ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন তিনি। স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যা বাবদ নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। একই সাথে বিভিন্ন সময়ে কৃষি কর্মকর্তা তাকে পরামর্শও দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ২ একর জমিতে তরমুজ চাষে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। ফসল বিক্রি করতে পারবেন আনুমানিক ৩ লাখ টাকা। এতে খরচ শেষে ২ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। ইতোমধ্যে জমি থেকে পুষ্ট তরমুজ তোলা শুরু হয়ে গেছে। পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ীরা এসে ট্রাক ভর্তি করে তরমুজ নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
কৃষক আবদুল আজিজের মতো উপজেলার চরজুবলী, চরকার্ক, মোহাম্মদপুর, চরবাটা ইউনিয়নের তরমুজ চাষি এনাম হোসেন, কামাল, মহি উদ্দিন, ইমাম হোসেন, আবুল কালাম ও একই আশা প্রকাশ করেন। এখানে কৃষকরা মার্ভেলাস, গ্লোরি, জাম্বু, ব্ল্যাক জাম্বু, বারি, ভিক্টর সুপার, গ্রিন ডায়মন্ড, সুপ্রীম সুপারসহ নানা জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। রমজান মাস এবং বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বেশি লাভের আশা করছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর উপ-পরিচালক মো. শহীদুল হক বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব। কৃষির উন্নয়নে আর্থিক প্রণোদনা, তথ্য-প্রযুক্তি ছাড়াও কৃষকদের কম খরচে অধিক ফলনে লাভবান হওয়ার নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর একটি হলো উচ্চজাতের ফসল তরমুজের আগাম চাষ। কৃষকরা যেন রোগ বালাই মুক্ত তরমুজ আবাদ করতে পারেন, সেজন্য কৃষি অফিসের একাধিক টিম মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের অন্যান্য জেলার তরমুজ থেকে স্বাদে-গুণে নোয়াখালীর তরমুজ আলাদা। আগাম তরমুজ চাষে এখানকার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা ভালো সুফল পেয়েছেন বলে জানান ওই কৃষি কর্মকর্তা।
Comments are closed.