আজ প্রতিবন্ধী দিবস
আজ ৩ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসটি ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘অভিগম্য আগামীর পথে’। প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতার প্রসার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা এবং উন্নতি সাধন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিকসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের সম্পৃক্ত করার সুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও এই দিবসের লক্ষ্য।
বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস’ পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিবসটি উপলক্ষে আজ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ছাড়াও জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এ উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে আজ প্রগতি সরণির ডিফারেন্ট ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র্যালি এবং ফ্রি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে থাকায় দিবসটির মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে ৫ ডিসেম্বর। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করবে মিরপুরের প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন।
দিবসটির নেপথ্যে
বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসের নেপথ্যে রয়েছে এক ঘটনাবহুল স্মৃতি। ১৯৫৮ সালের মার্চ মাসে বেলজিয়ামে এক ভয়ানক খনি দূর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা যায়। আহত পাঁচ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি চিরজীবনের মতো প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে। তাদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে ওঠে। তাদের প্রতি সহমর্মিতা ও পরহিতপরায়নতায় বেশ কিছু সামাজিক সংস্থা চিকিৎসা ও পুর্নবাসনের কাজে স্বতস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসে। পরের বছর জুরিখে বিশ্বের বহু সংগঠন সম্মিলিত ভাবে আন্তঃদেশীয় স্তরে এক বিশাল সমাবেশ করেন। সেখানে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবন্ধী কল্যাণে বেশকিছু প্রস্তাব ও কর্মসূচি গৃহীত হয়। খনি দূর্ঘটনায় আহত বিপন্ন প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রতিবন্ধী দিবস পালনের আহবান জানানো হয়। সেই থেকে ৩ ডিসেম্বর প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দিন হয়ে উঠেছে।
প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন ও সহযোগিতার হাত বাড়ানো প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। প্রতিবন্ধী শব্দটি দ্বারা ত্রুটি বা শারীরিক অসম্পূর্ণ ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে, এটি কোনো ব্যক্তির পরিচয় নয়। প্রতিবন্ধী বলে কাউকে আলাদা করে দেখা উচিত নয়। মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসা।
Comments are closed.