যে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকাতে খুন হন নোয়াখালীর যুবক লিংকন
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ফোর্ডসবার্গে আশু আলী খান লিংকন (৩৪) নামে এক বাংলাদেশি সন্ত্রাসীদের ৪ রাউন্ড গুলিতে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নির্মমভাবে খুন হয়েছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে এ হত্যা কাণ্ড ঘটে।
নিহত লিংকন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার রাজারামপুর গ্রামের দলিলুর রহমান খানের ছেলে। ৩ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন লিংকন।
প্রত্যক্ষদর্শীর জানান, শনিবার ২৩ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে একদল সন্ত্রাসী গাড়ীযোগে ফোর্ডসবার্গের আল-বার্টিনা সিসিলু রোডে দোকানে আসে। দোকানে ঢুকে লিংকনকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি ৪ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। ১টি বুকে এবং বাকী ৩টি পেটের এক সাইডে পড়ে অন্যদিকে বেরিয়ে যায় গুলি। সন্ত্রাসীরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করতেই ৪ রাউন্ড গুলি ছুড়ে কালক্ষেপন না করে দ্রুতই গাড়ি নিয়ে ছিটকে পড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লিংকনকে দ্রুত উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী গার্ডেনসিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সোমবার ফোর্ডসবার্গে জানাযা শেষে তার লাশ দেশে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত আলী খান লিংকনের মৃত্যু রহস্য এখনো উদঘাটন হয়নি। তবে অনেকের ধারণা, এটি একটি টার্গেট কিলিং। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার পকেটে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা পয়সা কিছুই পাওয়া যায়নি।
কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা না গেলেও সম্প্রতি একটি ঘটনা অনেকের মুখে শুনা গুনজন। ৩-৪ দিন পূর্বে এক মেয়ে কাস্টমারের সাথে মোবাইল মেরামত নিয়ে লিংকনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মেয়ের সাথে হাতাহাতি হয়।
পরবর্তীতে মেয়েটি তার ছেলে বন্ধু নিয়ে আসার পর উভয়ের সাথে আবারো হাতাহাতি হয়। এসময় পুলিশ এসে লিংকনকে থানায় নিয়ে গেলে ঘন্টা খানেক পর সে ছাড়া পায়। এ সময় মেয়েটি লিংকনকে হুমকি দিয়ে যায় বলে অনেকেই বলাবলি করছেন।
এছাড়া আরো দু’একটি ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকেই বলছেন কিন্তু প্রকৃত রহস্য কি এবং তা আদৌও কি কখনো বের হবে? তা অনিশ্চিত। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় সবক’টি হত্যাকান্ডের পর কোন মামলা হয় না। নিহতের পক্ষে কেউ মামলা না করার কারণে হত্যার প্রকৃত রহস্য ধামাচাপা পড়ে যায়।
নিহত লিংকন প্রায় ১০ বছর পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছে। জোহানেসবার্গের ফোর্ডসবার্গে ছোট্ট একটি মোবাইল দোকানে ব্যবসা চালু করেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় আফ্রিকা আসার পর থেকে আর দেশে ফিরতে পারেন নি। তার টাকা দিয়ে সংসার চলতো। আগামী মাসে ডিসেম্বরে তার দেশে যাওয়ার কথা ছিলো।
Comments are closed.