‘হোটেল বয়’ থেকে সুবর্ণচরের আতঙ্ক রুহুল আমিন!

165

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত রুহুল আমিন এক সময় ‘হোটেল বয়’ হিসেবে কাজ করতেন। পরে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন তিনি। ২০১১ সালে ৫ নম্বর চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন রুহুল আমিন।

এরপর তিনি এলাকায় অপরাধের রাজত্ব কায়েম করেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বনদস্যু ও জলদস্যুদের সংগঠিত করে নিজের নামে গড়ে তোলেন ‘রুহুল আমিন বাহিনী’। এরপর থেকেই নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদে রুহুল আমিন হয়ে ওঠেন এক আতঙ্কের নাম।

চরজুবিলীতে সরেজমিনে জানা গেছে, রামগতির চরাঞ্চলের লাঠিয়াল খুরশিদ আলমের ছেলে রুহুল আমিন। খুরশিদ আলমও ছিলেন হত্যা মামলার আসামি। ১৯৮০ সালে বেচু হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন তিনি।

জানা যায়, রুহুল আমিন ছোটবেলায় হারিছ চৌধুরী বাজারে রাহিন-মাহিন হোটেলে বয়-এর কাজ করতেন। কিছু দিন কাজ করার পর তিনি জেলা শহর মাইজদীর মোবারক মিয়ার বাসায় কাজ নেন। ওই বাসায় কাজ করার পাশাপশি নোয়াখালী ইউনিয়ন হাইস্কুলে পড়ালেখা করে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর সুবর্ণচর উপজেলার পাংখার বাজারে সততা নামে একটি স্থানীয় এনজিওতে চাকরি নেন রুহুল।

অভিযোগ রয়েছে, ওই এনজিওর ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে রুহুল আমিন ঢাকায় চলে যান এবং রাজধানীর কাওরান বাজারে পাইকারি সবজি দোকানে কাজ নেন। সেখান থেকেও বেশ মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে বরিশাল চলে যান। পরে জেলা শহর মাইজদিতে অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান নাছেরের সহায়তায় জেলা জজকোর্টে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। মূলত এ সময়ই তিনি নিজ এলাকার লোকজনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ওয়ার্ড সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০১১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫ নম্বর চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তাকে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০১১ সালে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর রুহুল আমিন বিভিন্নভাবে অপরাধের রাজত্ব সৃষ্টি করেন। তিনি বনদস্যু ও জলদস্যুদের সংগঠিত করে ‘রুহুল আমিন বাহিনী’ নামে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন। তার এই বাহিনীর দেখ-ভাল করতো বনদস্যু হাসান আলী রুলু।

২০১১-১৬ সাল পর্যন্ত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কয়েম করায় ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে হেরে যান রুহুল। কিন্তু তারপরও এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামগতি-চরজব্বার সড়কের পাংখার বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে তার নামে গড়ে তোলা হয়েছে রুহুল আমিন নগর। একটু এগিয়ে গেলেই খালের ওপর সেতু, তারপর প্রশস্ত সড়ক। সেই সড়ক পথে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে রুহুল আমিনের বিলাসবহুল বাড়ির প্রবেশ পথ।

কথা হয় বাড়ির কেয়ারটেকার রাকিব হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, ৬/৭ বছর ধরে এই বাড়িতে আছেন তিনি। বাড়ির মালিক রুহুল আমিন আগে পূর্বদিকের নার্সারির জায়গায় একটি ছোট টিনের ঘরে থাকতেন। ২০১১ সালের দিকে তিনি এই ঘরটি নির্মাণ করেন।

রুহুল আমিনের প্রথম স্ত্রী শিরীন আক্তার বলেন, ‘ঘরটি ২০১১ সালে ইউপি সদস্য হওয়ার আগে ঋণ নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। পরে ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নারী প্রতিবেশীর দাবি, রুহুল আমিন বাহিনীর ভয়ে তারা সব সময় আতঙ্কিত থাকেন। রুহুলের ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিক মিয়া বলেন, ‘সরকারি জায়গার ওপর নিজের নামে রয়েছে রুহুল আমিন নগর। সেখানে তিনি সরকারি জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করেছেন। রাস্তার ওপর সবুজ বনায়নের বড় বড় গাছগুলো বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আমিন উল্যা ভুলু ও আবদুল হকের জমি দখল করে এ বছর একটি ব্রিকফিল্ড চালু করেছে রুহুল।’
তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন মধ্য বাগ্যা ১৪ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাতে আমার বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। তারা আমাকে এবং আমার সন্তানদের বেঁধে ফেলে। আমার স্ত্রীকে জোর করে ঘরের বাইরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। রুহুল আমিনের নির্দেশেই এসব ঘটেছে।’

সবুজ বনায়নের পাংখার বাজার থেকে একরাম নগর পর্যন্ত রাস্তার গাছ কেটে নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নোয়াখালী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা এ কে এম ইউসুফ অভিযোগ স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘গত মাসে কিছু গাছ কেটে রাস্তার পাশে ফেলে রাখার পর, আমরা গাছের গুড়িগুলো বিক্রি করে রাজস্ব খাতে জমা দিয়েছি।’

রুহুল আমিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। এসব ষড়যন্ত্র। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে রুহুল আমিনের ভায়রা আবু সাঈদ বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে রুহুল আমিন জড়িত নয়। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক এটা রুহুল আমিনও চায়।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডেভাকেট ওমর ফারুক বলেন, ‘রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠছে, এগুলোর সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে বাতাসে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পায় তারা।

চাটখিলে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

বেলায়েত হোসেন আশা করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসায় তিনি বিপুল ভোটে চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

চাটখিলে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত এর মতবিনিময়

নোয়াখালীর চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে চাটখিল উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সাংবাদিক মেহেদী হাছান রুবেল ভুঁইয়া’র পৃষ্ঠপোষকতায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিনি দেশবাসীকে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে কুরআন পাঠের আহ্বান জানান।

সারাদেশে অর্থসহ কুরআন পাঠ দিবস পালিত

Comments are closed.