সোনাগাজীতে উপকূলবাসীর পাশে সাংসদ, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়‘ বুলবুল’ মোকাবিলায় সোনাগাজী সিপিপির দেড়হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ দুই হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে দুর্যোগকালীন উদ্ধার তৎপরতাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য তাদের প্রস্তুত করা হয়েছে। মওজুদ রাখা হয়েছে শুকনো খাবার। অর্ধশত আশ্রয়কেন্দ্র । পাশাপাশি উপজেলার সব সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া সব কয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও দুযোর্গকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।এছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। বুলবুলের প্রভাবে সকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের গতিবেগ বাড়তে শুরু করেছে। শনিবার (০৯ নভেম্বর) সকাল থেকে জেলার উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ প্রবণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ জনগণকে সর্তক করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলায় অর্ধশত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ উপজেলার সব কয়টি বিদ্যালয়কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে এবং ১০টি চিকিৎসক দল, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগকালী উদ্ধার তৎপরতাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য সিপিপির দেড়হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ দুই হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে। মওজুদ রাখা হয়েছে শুকনো খাবার। তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকায় জনগণকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সর্তক করে জানমাল ও গবাদিপশুর নিরাপদে সরানোর প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের দুর্যোগকালীন নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, সমগ্র জেলায় ৭৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রেখেছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় খাবার স্যালাইনসহ প্রাথমিক ওষুধ মজুদ রেখেছেন। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় মানুষের জন্য ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৬শ মেট্রিক টন গম, চিড়া, মুড়িসহ বিশুদ্ধ পানির মজুদ রাখা হয়েছে। কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের বাড়ির মালপত্র নিরাপত্তা পর্যাপ্ত পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া রেড ক্রিসেন্ট, স্বেচ্ছাসেবক, সিপিবি, রোভার, আনসার বিডিপির সদস্যরা দুর্যোগ কবলিত এলাকার মানুষের পাশে নিয়োজিত থাকবে । সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে এবং কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখবে। মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু ও খামারের পশুদেরও নিরাপদ স্থানে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের। দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে কৃষি ও মৎস ক্ষাত ছাড়ও সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় সব বিভাগ কাজ করবে বলে যোগ করেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান। এদিকে জেলা তথ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।ক্ষয়ক্ষতি রোধে দিনভর উপকূলবাসীর পাশে গিয়ে কোঁজ খবর নিতে দেখা গেছে স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব.)মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে।
Comments are closed.