‘মরে যান, টাকা মাফ হয়ে যাবে’
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় এনজিও কর্মীদের খারাপ ব্যবহারে মনোকষ্ট পেয়ে নাজমা আক্তার (৪১) নামের চার সন্তানের জননীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। নাজমা আক্তার গৌরীপুর গ্রামের সফিকুল ইসলামের স্ত্রী। শনিবার (২ নভেম্বর) গৌরিপুর গ্রামের পূর্ব পাড়া মোল্লা বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, সফিকুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেন। তার মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, দিশা, ব্রাক ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। নাজমা বেগমের চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, দুই মেয়ে বর্তমানে স্কুলে লেখাপড়া করছে। স্বামী সফিকুল ইসলাম স্থানীয় বাজারে মাছের ব্যবসা করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতো। সম্প্রতি সময়ে নাজমা আক্তার এনজিওর ঋণ সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে পারছিলেন না। শুক্রবার আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তির তারিখ ছিল। নাজমা বেগম কিস্তির টাকা দিতে না পারায় আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকের লোকজন তার বাড়িতে এসে তাকে গালমন্দ করতে থাকেন।
নাজমা আক্তারের পাশের ঘরে বসবাসকারী রানু বেগম জানান, শুক্রবার কিস্তির টাকার জন্য দুজন লোক আসে। নাজমা বেগম টাকা দিতে না পারায় গালমন্দ করে তারা। এক পর্যায়ে তারা বলেন, ‘টাকা না দিতে পারলে মরে যান, মরে গেলে টাকা মাফ হয়ে যাবে।’ এনজিওকর্মীদের এমন কথায় কাঁদতে থাকেন নাজমা।
রানু বেগম বলেন,এনজিও কর্মীরা চলে যাওয়ার পর নাজমা আক্তার ঘরের দরজা বন্ধ করে কাঁদতে থাকেন। শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় নাজমা আক্তার ঘরের মধ্যে থাকা ছারপোকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে গৌরীপুর মুক্তি মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। দাউদকান্দি থানা পুলিশ বিকেলে নাজমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
দাউদকান্দি থানার ওসি মো.রফিকুল ইসলাম জানান, অপমৃত্যুর খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার বন্ধ থাকায় এনজিওকর্মীদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
Comments are closed.