বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি শেষ, হট্টগোলের পর রায় স্থগিত
ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। বুধবার শুনানির শেষ দিকে আদালতে হট্টগোলের পর রায় স্থগিত রেখেছেন শীর্ষ আদালত।
বুধবার যে এই শুনানি পর্ব শেষ হতে পারে তা এ দিন সকালেই জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। শুনানির জন্য এ দিন আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন হিন্দু মহাসভার এক আইনজীবী। কিন্তু প্রধান বিচারপতি তার আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে। আজ বিকেল পাঁচটায় অযোধ্যা শুনানি শেষ হতেই হবে।’’
আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর নিতে চলেছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ধারণা করা হচ্ছে তার আগেই তিনি এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
সোমবার, দশেরার ছুটির পর, দৈনিক শুনানি শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট। মুসলিম প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনেন শীর্ষ আদালত। তারা আদালতে জানান, ১৯৮৯ এর আগে পর্যন্ত জমি নিয়ে হিন্দুদের পক্ষ থেকে কোনও দাবি ছিল না। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে বাবরি মসজিদ ভাঙার আগে, সেখানে যেভাবে বাবরি মসজিদ ছিল, সেভাবে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান মুসলিম প্রতিনিধিরা।
২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ১৪টি মামলা দায়ের হয়, সেখানে বলা হয়, অযোধ্যার ২.৭৭ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহি আখরা এবং রাম লালার মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে।
হিন্দু মহাসভা মনে করে, জায়গাটি ভগবান রামচন্দ্রের জন্মভূমি এবং প্রাচীন মন্দিরের ভগ্নাবশেষের ওপরে মসজিদ তৈরি করা হয়। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা ১৬ শতকের বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে। এর ফলে ভারতজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
আদালত কক্ষে হট্টগোল
সুপ্রিম কোর্টে বাবরি মসজিদ মামলার মুসলিম পক্ষের এক আইনজীবী আদালতে বিচারকদের সামনেই ‘রাম জন্মভূমির চিহ্নিতকারী’ একটি মানচিত্র ছিঁড়ে ফেলেন। হিন্দুদের পক্ষের আইনজীবীরা এতে হট্টগোল শুরু করেন। এ সময় আদালতের বিচারকরা বিরক্ত হন এবং এজলাস ছেড়ে উঠে যাওয়ার কথা বলেন।
এদিকে অযোধ্যায় আরও কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অনুমতি ছাড়া ওই এলাকায় ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ওই জেলায় নৌকা চালানো, বাজি তৈরি এবং বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত করে দেওয়া এলাকায় দোকান ও গোডাউন খোলা রাখার ক্ষেত্রে ছাড়া দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে গত ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ওই এলাকায়।
Comments are closed.