প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির রাহুগ্রাসে বেগমগঞ্জের নরোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয়

202

নোয়াখালির বেগমগঞ্জ উপজেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ গুলোর মধ্যে ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম। যাহা একটি স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত । অসংখ্য আলোকিত মানুষের সৃষ্টি হয়েছে এই বিদ্যা নিকেতন থেকে ।স্বনামধন্য চিকিৎসক প্রকৌশলী ও দেশ বরেণ্য গুনীজনের আঁতুড় ঘর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এক কৌশলী দুর্নীতিবাজ শিক্ষক নামধারী দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজের রাহুগ্রাসে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । নামে বেনামে তথাকথিত উপলক্ষ সৃষ্টি করে রসিদ কিংবা বিনা রসিদে সাধারণ গরিব শিক্ষার্থীদের নিকট চাঁদাবাজি যেন তার নিত্য দিনের কাজ! এই চাঁদাবাজির সিংহভাগ অর্থ কোন জবাবদিহিতা ছাড়াই আত্মসাৎ করে থাকেন তিনি। সরকার নির্ধারিত ৫০ টাকার রেজিষ্ট্রেশন ফি উনি ৫০০ টাকা আদায় করেন! (আরাফাত হোসেন ৮ম শ্রেণী শাখা ‘ক’, রসিদ নং ১৩৭৩৮)। দুর্নীতিতে তারকা খেতাবধারী এই শিক্ষক উনার পূর্ববর্তী চাকরিস্হল অথাৎ অন্য স্কুল থেকে এলাকাবাসীর গণপ্রতিরোধ ও বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত হয়ে চাকুরিচ্যুত হয়েছিলেন!

বলছিলাম নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো ইউনুছ নবির কথা। সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তার অসংখ্য দুর্নীতি থেকে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
বিগত ৩১ জানুয়ারী ২০১৫ইং তারিখে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা) সহঃ শিক্ষক কম্পিউটার =মোট ৫টি পদে লোকবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং নির্বাচনী বোর্ড গঠন করা হয়। প্রধান শিক্ষক ইউনুছ নবী, সহঃকারী প্রধান শিক্ষক পদে মোঃ মোশারফ হোসেন, সহ শিক্ষক পদে নাহিদা আক্তার ও রুমা রানী পাল এবং সহঃ শিক্ষক কম্পিউটার পদে খোন্দকর মোহাম্মদ ইদ্রিছ মিয়াকে নির্বাচিত করা হয় ।

প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ ইউনুছ নবী সম্পর্কে পূর্বের বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ও নিয়োগ কমিটির মনঃপূত না হওয়াই পরিচালনা পরিষদ জনাব ইউনুছ নবীকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বাকী ৪ জন শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার ফলশ্রুতিতে গত ০৪/০২/১৫ ইং তারিখে বাকী ৪ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হন এবং কর্মস্থলে যোগদান করেন। এরই মধ্যে জনাব ইউনুছ নবী বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও কতিপয় সদস্যকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে গত ০১/০৪/১৫ ইং তারিখে যোগদান করেন ।

জনাব ইউনুছ নবী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহন করার পর বিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্যে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন । ফলে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে । জানা যায়, উক্ত প্রধান শিক্ষকের (ইউনুছ নবী) স্নাতক ও বিএড সনদ সঠিক নয় ! বিষয়টি সাবেক একজন অভিভাবক সদস্য পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সভায় অবহতি করেন এবং তার তাঁর সনদ দাখিল করার বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করেন, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আজ পর্যন্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট তা দাখিল করা হয়নি !

অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক যোগদান করার পর এ যাবৎ তিনজন শিক্ষক অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়ে এমপিও ভুক্ত করিয়েছেন। উক্ত শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক প্রতিনিধি বা পুরাতন শিক্ষক বা এলাকার কোন শিক্ষানুরাগী এবং অত্র এলাকার কোন লোকজন এ বিষয়ে কিছুই জানে না। আরও উল্লেখ্য যে কোন নিয়োগ কমিটি /বোর্ড গঠন বা কোন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অত্র নিয়োগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হয়েছে বলেও কেহ অবগত নন!

সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে সোহাগ হোসেন ইনড্রেক নং – ১১৩১৭০৫ কে নিয়োগ প্রদান করেন অথচ উক্ত ব্যক্তির গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিষয়ে কোন সনদ বা কোন অভিজ্ঞতা নেই । সহকারী শিক্ষক পদে মোহাম্মদ ইউছুপ ইনড্রেক নং – ১০৩৭১৮১ কে নিয়োগ প্রদান করেন উক্ত শিক্ষক অন্য বিদ্যালয় হইতে চাকুরিচ্যুত হন । তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়মে সম্পন্ন হয় নাই।

বিগত ১৮ই অক্টোবর ২০১৭ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয় । নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হলেও প্রধান শিক্ষকসহ বিগত কমিটির চক্রান্তের কারণে উক্ত নির্বাচিত কমিতি আজও দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারেনি । বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্টে বিচারাধীন ।যার রীট নং ৬৪৪৩/২০১৮।

উল্লেখ্য যে, প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের কমিটির নিশ্চিত ভরাডুবি অনুমান করতে পেরে উনার আনুগত্য একজন ভোটারকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই ভোটার তালিকায় অন্তভুক্তি করেন নাই।যদিও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ণের পূর্বে বাদ পড়া ভোটারদের অন্তভুক্তির জন্য নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। প্রধান শিক্ষক ও সাবেক কমিটির চক্রান্তের অংশ হিসেবে ঐ ভোটার নির্দিষ্ট সময়ে ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্তি করেন নাই। যা প্রধান শিক্ষক নির্বাচন পরবর্তী তদন্ত কমিটির কাছে হাজার মানুষের সম্মুখে স্বীকার করেন। উক্ত ভোটার মো জসিম উদ্দিনের সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা নেই বললেই চলে । বিভিন্ন সময়ে সে বিভিন্ন অনৈতিক অপরাধে জড়িত থাকার কারনে তাকে সামাজিকভাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে ।যাকে প্রধান শিক্ষক তার ট্রম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতেছেন।

দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়ের কোন কমিটি না থাকায় প্রধান শিক্ষক তাঁর একক স্বেচ্ছাসারিতায় বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন । হাইকোর্ট কর্তৃক এডহক কমিটি স্থগিত হলেও উক্ত কাগজপত্র দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা বেতন ভাতা সহ, ছাত্রছাত্রীদের বেতন, পরীক্ষার ফি, বিদ্যালয়ের জমির নগদ খাজনা – ইত্যাদি খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন ।

গত – ২১/০১/২০১৯ ইং তারিখে চারজন স্টাফ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন । কমিটি না থাকায় এ ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া কতটুকু আইন সম্মত তা জনসাধারণের নিকট বোধগম্য নহে । তাছাড়া উক্ত নিয়োগের জন্য বিভিন্ন লোক থেকে টাকা নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন । বিগত এস এস সি পরীক্ষায় উক্ত প্রধান শিক্ষক বেগম কেন্দ্র- ৭ জমিদার হাট বি এন উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে কেন্দ্র সচিব ছিলেন ।তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় উনার কর্মস্থল নরোত্তম পুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের গত বছরের ফেল করা এক পরীক্ষার্থীর ব্যবসা উদ্যোগ পরীক্ষা একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রকে দিয়ে দেওয়ানো হয়েছে !অথাৎ এক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা আরেক শিক্ষার্থী দিয়েছে!নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশবর্তী টেকের হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির রেজিষ্ট্রেশন নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে করা হয়,যদিও ঐ শিক্ষার্থীরা টেকের হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস করেন।গত এস এস সি পরীক্ষায় টেকের বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন বেগম ৭ কেন্দ্রে হল পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।মানে শিক্ষার্থী এবং পরিদর্শক একই বিদ্যালয়ের! উক্ত প্রধান শিক্ষক এসকল অপকর্মের মাষ্টার মাইন্ড ।বিনিময়ে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করেন!

স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে উনি এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন ।তার এসমস্ত আর্থিক অনিয়ম ও অনৈতিক অত্যাচারে এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক এবং শিক্ষানুরাগী সবাই খুবই বিরক্ত ও ক্ষিপ্ত ।কিন্তু সবাই অসহায় ও হতাশ তার অপকৌশলে এবং কিছু অসাধু প্রভাবশালীর তাকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়। উপরোক্ত বিষয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি দুর্নীতি মুক্ত হবে এবং বিদ্যালয়টি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে ।

আরও পড়ুন

মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি মো.মেহেদী হাছান রুবেল ভূঁইয়া বলেন,ঐতিহ্যবাহী চাটখিল কামিল মাদ্রাসা একটি শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান।জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ এ প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

চাটখিল কামিল মাদ্রাসা শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে বাতাসে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পায় তারা।

চাটখিলে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

বেলায়েত হোসেন আশা করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসায় তিনি বিপুল ভোটে চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

চাটখিলে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত এর মতবিনিময়

নোয়াখালীর চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে চাটখিল উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সাংবাদিক মেহেদী হাছান রুবেল ভুঁইয়া’র পৃষ্ঠপোষকতায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিনি দেশবাসীকে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে কুরআন পাঠের আহ্বান জানান।

সারাদেশে অর্থসহ কুরআন পাঠ দিবস পালিত

Comments are closed.