দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, সমাজের এই ‘অসুস্থতা’ নির্মূল করা হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর ধরে দেশ শাসনকারীদের অপকর্মের কারণে অনেক ময়লা ও আবর্জনা জমে গেছে এবং মানুষের চরিত্রে ভাঙন ধরেছে। আমরা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এ অভিযান চলবে।
স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মাদ্রিদের হোটেল ভিলা মাগনায় এ অনুষ্ঠানে স্পেনে ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বাংলাদেশের জনগণের একজন সার্বক্ষণিক কর্মী। আমি বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছি; যাতে শহর ও গ্রাম উভয় এলাকার মানুষ আমাদের কাজের সুফল পেতে পারে।
তিনি বলেন, এক শ্রেণির মানুষ ঘুষ-দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে, সন্ত্রাস করে, লোকজনের সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করতে চায় এবং তারা বলতে চায় যে ‘মুই কি হনুরে’। কিন্তু আমরা চাই জনগণের মধ্যে এ ধরনের মানসিকতা থাকবে না এবং সমাজের এ অসুস্থতা নির্মূল করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসৎ পথে থেকে ‘বিরিয়ানি’ খাওয়ার চেয়ে সৎ পথে থেকে ‘নুন-ভাত’ খাওয়া অনেক ভালো। আমরা জাতির জনকের কাছ থেকে এ শিক্ষা পেয়েছি। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এ শিক্ষা দিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাম শুনলে অন্য দেশের মানুষ এখন বাংলাদেশকে সম্মান করে। কিন্তু তারা আগে জানত যে- বাংলাদেশ হচ্ছে বন্যা, খরা, দুর্ভিক্ষ ও দুর্নীতির দেশ।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের কল্যাণে তার সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে রেমিটেন্স পাঠালে সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় বাংলাদেশ পাঁচবার দুর্র্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কিন্তু এখন সে দুর্নাম ঘুচে গেছে। বিএনপিকে ভোট জালিয়াতির মাস্টার হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ‘হ্যাঁ-না’র রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, ঢাকা-১০, মিরপুর এবং মাগুরা উপনির্বাচনের মতো জালিয়াতির নির্বাচন করেছে। তারাই ভোট জালিয়াতির মাস্টার। আবার এখন তারা নীতিকথা শোনাচ্ছে!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জিডিপির হার ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। আমরা প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছি এবং আমরা চাই যে, একটি বাড়িও অন্ধকারে থাকবে না।
তিনি বলেন, উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে আমরা ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দিন।
Comments are closed.