ঐতিহ্যবাহী দালাল বাজার জমিদার বাড়িতে হচ্ছে প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর
লক্ষ্মীপুর জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও পর্যটন শিল্প উন্নয়নে তিনশ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী দালাল বাজার জমিদার বাড়ি ও খোয়াসাগর দিঘিকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ও পর্যটন কেন্দ্র হতে যাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী এই স্থাপনা গুলোকে কেন্দ্র করে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ও পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তর। প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হান্নান মিয়া দালাল বাজার জমিদার বাড়ি ও খোয়াসাগর দিঘি পরিদর্শনে এসে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) ড. মো. আতাউর রহমান, লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুর রিদোয়ান আরমান শাকিল, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মামুনুর রশিদ, প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুর ইসলাম, রিফাত হোসেন প্রমুখ।
লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে অবস্থিত তিনশ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী দালাল বাজারের জমিদার বাড়ি। বৃহত্তর নোয়াখালীর অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা দালাল বাজারের জমিদার বাড়িটি দর্শনার্থীদের দারুণ আকর্ষণের জায়গা। কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে তিনশ বছরের পুরনো এই জমিদার বাড়িটি। দালল বাজারের পাশেই ১৪ একর সম্পত্তিতে রয়েছে পরিতেক্ত্য রাজ গেট, জমিদার প্রাসাদ, অন্দরমহল, শান বাঁধানো ঘাট, জমিদার বাড়ির প্রাচির, নির্মান সামগ্রী, বিশেষ করে কয়েক টন ওজনের লোহার বিম, বিরাটাআকার লোহার সিন্দুক, নৃত্যশালা, বহিরাঙ্গন, চারটি পুকুর। সুন্দর সাজানো গোছানো বাড়িটি দেখলে জমিদারের নান্দনিক রুচির পরিচয় পাওয়া যায়। সাড়ে সাত একর জমির উপর তৈরি বাড়িটির বেতরে চারটি পুকুর, সাতটি ভবন ও একটি বিশাল বাগান রয়েছে। চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো সুন্দর এই জমিদার বাড়ির সামনে ২৫ একর জমির উপর রয়েছে খোয়াসাগর দিঘি। শীত কালে এই দিঘিতে অতিথি পাখির কলোতানে দৃষ্টি কাড়ে সবার। দারণা করা হয় জমিদার রাজ ব্রজবল্লব রায় মানুষের পানিয় চাহিদা মিটাতে দিঘিটি খনন করেন। এই দিঘি নিয়ে নানান কল্পকাহিনী প্রচলিত আছে। খোয়াসাগর দিঘির পাশে রয়েছে প্রায় দুইশ বছরের পুরানো চারটি মঠ।
প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক হান্নান মিয়া বলেন, চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই দালাল বাজার জমিদার বাড়ির চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তর থেকে সরকারের কাছে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন প্রকল্প দাখিল করা হবে। এরপর সরকার প্রকল্পটি অনুমোদন করলে পুরোদমে কাজ শুরু করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, দালাল বাজার জমিদার বাড়ি ও খোয়াসাগর দিঘি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ও পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযুক্ত একটি স্থান। কিন্তু আমাদের হস্তক্ষেপ না থাকায় অযত্নে-অবহেলা ও দুর্বৃত্তের কবলে পড়ে ঐতিহ্যবাহী এই নিদর্শনটি বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। তবে দেরিতে হলেও জায়গাটি সংরক্ষণ করে সৌন্দর্য বর্ধন করায় জেলা প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রত্নত্ত্বঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক হান্নান মিয়া।
Comments are closed.