নোয়াখালীতে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে পিটিয়ে হত্যা
জেলার সোনাইমুড়ীতে শাহিদুজ্জামান পলাশ (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মাথায় ভারী কোনো বস্তুর আঘাতে তার মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গেছে, শাহিদুজ্জামান পলাশ সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনের সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন।
যে কারণে এ হত্যাকাণ্ড নির্বাচনী সহিংসতা বলে ধারণা অনেকের। তবে পলাশের মৃত্যুর কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, পলাশ নাটেশ্বর গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে। পাঁচ বছর আগে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন তিনি। এরই মধ্যে ইতালি যাওয়ার জন্য টাকাও জমা দিয়েছিলেন। সদ্য শেষ হওয়া সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভুইঁয়া মানিকের পক্ষে একটি কেন্দ্রে এজেন্টের দায়িত্বে ছিলেন পলাশ।
পলাশের ফেসবুক আইডি দেখে নির্বাচনে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেও তিনি ‘অল মানিক ভাই’ লিখে একটি পোস্ট করেছিলেন।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মাথা ভারী কোনো জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে এসে নিহতের স্ত্রী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পলাশ স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। তার বাড়িতে (ঘটনাস্থল) ঘরসহ একটি মুরগির খামার ছিল। এগুলোর দেখভালে পলাশ প্রায়ই বাড়ি যেতেন।
ওসি বলেন, শনিবার বিকেলে কয়েকটি মুরগি বিক্রি করার পর খামারে কর্মরত দুই কর্মচারী সন্ধ্যায় চলে যায়। এরপর থেকে পলাশ একা খামারে ছিলেন। রাত ৮টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করে তিনি জানান, খামার থেকে একটি হাঁস পার্টিতে গিয়ে রাতে বাড়ি ফিরবেন। এরপর রাত ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন তার ঘরের পাশে পলাশের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং হত্যার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
নির্বাচনের পর থেকে পলাশকে জয়ী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মোরশেদ আলম এমপির লোকজন হুমকি দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী (কাঁচি প্রতীক) আতাউর রহমান মানিক।
তিনি বলেন, তারা (মোরশেদ আলমের লোকজন) প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে প্রতিদিনই সেনবাগ, সোনাইমুড়ি, বজরা এলাকায় এসে আমার লোকজনদের হুমকি-ধামকি দিয়েছে। গতকালও দিয়েছে। নির্বাচনের পর থেকে তারা আমার কর্মী ও নির্বাচনী এজেন্ট পলাশকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল।
পলাশের নিহতের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী মোরশেদ আলম বলেন, আমি এর আগেও দশ বছর সংসদ সদস্য ছিলাম। বিগত দিনে আমার নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক হানাহানি ঘটেনি। এখন কেন ঘটছে, পুলিশ ও প্রশাসন তা খতিয়ে দেখুক।
Comments are closed.