সাত বীরের অন্যতম একজন নোয়াখালীর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম নোয়াখালীর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বাগপাদুরা গ্রামে। রুহুল আমিনের বাবা আজহার পাটোয়ারী। মায়ের নাম জোলেখা খাতুন। তিনি নোয়াখালী জেলার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারের সন্তান। রুহুল আমিন পরিবারের প্রথম সন্তান। সাত ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলের কাছেই তিনি ছিলেন প্রিয়পাত্র। দীর্ঘদেহী, সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকার হওয়ার ফলে অনেকের মধ্য থেকে তাঁকে চেনা যেত। তাঁর চোখগুলো ছিল পাখির মতো আয়তাকার। ভালোবাসতেন দেশ, দেশের মাটি আর দিগন্তবিস্তারী সমুদ্র। সমুদ্র খুব প্রিয় ছিল তাঁর। তাঁর প্রিয় খেলার মধ্যে ছিল নদীতে ডুব সাঁতার কাটা। নদীতে ডুব সাঁতার খেলতে খেলতেই বড় হন তিনি। পানিতে যখন খেলা করেন তখন তা নিতান্তই স্বাভাবিক মনে হয়। মনে হয় জলের দেবতা বুঝি পানিতে অদ্ভুত আলোড়ন তুলছেন। আর তিনি যখন ডাঙায় উঠে আসেন তখন মনে হয় ভুল করে কোন জলদেবতা ডাঙায় উঠে এসেছেন। এই জলদেবতাই একদিন বাংলাদেশের জন্মলগ্নের এক সন্ধিক্ষণে বাংলার জলপথকে শত্রুমুক্ত করতে গিয়ে অসীম সাহসে ঢেলে দিয়েছিলেন বুকের তাজা রক্ত। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামে রূপসা নদীতে নৌবাহিনীর জাহাজ পলাশ নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাথে এক ‘ভুল বোঝাবুঝির যুদ্ধে’ গোলার আঘাতে শহীদ হন আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন। পরবর্তীতে স্থানীয় জনসাধারণ বাগমারা গ্রামে রূপসা নদীর পাড়ে তাকে দাফন করে এবং সেখান একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। যুদ্ধে তাঁর অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

196

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম নোয়াখালীর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বাগপাদুরা গ্রামে। রুহুল আমিনের বাবা আজহার পাটোয়ারী। মায়ের নাম জোলেখা খাতুন। তিনি নোয়াখালী জেলার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারের সন্তান। রুহুল আমিন পরিবারের প্রথম সন্তান। সাত ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলের কাছেই তিনি ছিলেন প্রিয়পাত্র। দীর্ঘদেহী, সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকার হওয়ার ফলে অনেকের মধ্য থেকে তাঁকে চেনা যেত। তাঁর চোখগুলো ছিল পাখির মতো আয়তাকার। ভালোবাসতেন দেশ, দেশের মাটি আর দিগন্তবিস্তারী সমুদ্র। সমুদ্র খুব প্রিয় ছিল তাঁর। তাঁর প্রিয় খেলার মধ্যে ছিল নদীতে ডুব সাঁতার কাটা। নদীতে ডুব সাঁতার খেলতে খেলতেই বড় হন তিনি। পানিতে যখন খেলা করেন তখন তা নিতান্তই স্বাভাবিক মনে হয়। মনে হয় জলের দেবতা বুঝি পানিতে অদ্ভুত আলোড়ন তুলছেন। আর তিনি যখন ডাঙায় উঠে আসেন তখন মনে হয় ভুল করে কোন জলদেবতা ডাঙায় উঠে এসেছেন। এই জলদেবতাই একদিন বাংলাদেশের জন্মলগ্নের এক সন্ধিক্ষণে বাংলার জলপথকে শত্রুমুক্ত করতে গিয়ে অসীম সাহসে ঢেলে দিয়েছিলেন বুকের তাজা রক্ত।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামে রূপসা নদীতে নৌবাহিনীর জাহাজ পলাশ নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাথে এক ‘ভুল বোঝাবুঝির যুদ্ধে’ গোলার আঘাতে শহীদ হন আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন। পরবর্তীতে স্থানীয় জনসাধারণ বাগমারা গ্রামে রূপসা নদীর পাড়ে তাকে দাফন করে এবং সেখান একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। যুদ্ধে তাঁর অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়

তার প্রাথমিক পড়ালেখার শুরু হয় বাঘচাপড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে আমিষাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এখান থেকে এসএসসি পাশ করে ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগ দেয়ার পর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য তিনি যান করাচির নিকটবর্তী আরব সাগরে মধ্যে অবস্থিত মানোরা দ্বীপে পাকিস্তানি নৌঘাঁটি (পি.এন.এস) বাহাদুরে। প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর সেখান থেকে পি.এন.এস. কারসাজে যোগদান করেন। পরবর্তীতে পি.এন.এস বাবর, পি.এন.এস খাইবার এবং পি.এন.এস তুঘরিলে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে পেশাগত প্রশিক্ষণ শেষ করেন। ১৯৬৫ সালে মেকানিসিয়ান কোর্সের জন্য নির্বাচিত হন। পি.এন.এস. কারসাজে কোর্স সমাপ্ত করার পর আর্টিফিসার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম পি.এন.এস. বখতিয়ার নৌঘাঁটিতে বদলি হয়ে যান।

১৯৭১ সালে সারা বাংলাদেশে আগুন জ্বলছে । দেশের গদ্দার রাজাকার বাহিনীকে সাথে নিয়ে পাক জল্লাদরা অবাধে নরহত্যা, লুণ্ঠন চালাচ্ছে । ঘরে ঘরে মা বোনেরা ধর্ষিতা হচ্ছে । গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে আনন্দ উল্লাস করছে হানাদাররা । প্রিয়জন হারা মানুষের কান্না কেউ যে উপভোগ করতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না । এরকম পরিস্থিতিতে রুহুল আমিন এর মত মহান দেশ প্রেমিক কিভাবে চুপ করে বসে থাকতে পারে ? চারিদিকে কোণঠাসা বাঙালিরা প্রতিরোধ গড়ে তুলছে । সারা দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ দলে দলে যোগ দিচ্ছে মুক্তিবাহিনীতে । মোহাম্মদ রুহুল আমিনও যোগ দিলেন মুক্তিযুদ্ধে ।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করার পর এপ্রিল মাসে ত্রিপুরা সীমান্ত অতিক্রম করে ২ নম্বর সেক্টরে যোগদান করেন তিনি । এরপর থেকে, টানা সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মোহাম্মদ রুহুল আমিন বেশ কতকগুলি সামনাসামনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বাংলাদেশ নৌ বাহিনী গঠন করার । সবথেকে যোগ্য যোদ্ধাদের আহ্বান করা হয় সারা দেশ থেকে । ওই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রাক্তন নৌসেনারা আগরতলায় সংঘটিত হন এবং নৌবাহিনীর প্রাথমিক কাঠামো গঠন করেন । রুহুল আমিন সহ সকলে কলকাতায় আসেন । প্রাথমিক কাঠামো গঠন করার পর ভারত সরকার এই নবগঠিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে উপহার হিসাবে দুটি ট্যাগ বোর্ড । কলকাতার গার্ডেন রিচে এগুলোর সাথে বাফার গান এবং মাইন গড জুড়ে নিয়ে গান বোর্ড এ রুপান্তরিত করা হয় । গান বোর্ড দুটির নামকরণ করা হয় যথাক্রমে পদ্মা ও পলাশ । রুহুল আমিন গান বোর্ড পলাশের ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার হিসেবে দায়িত্ব নেন ।

১৯৭১ সালের ৬ ই ডিসেম্বর মংলা বন্দরে পাকিস্তান নৌ ঘাটি বিএনএস তিতুমীর ঘাঁটি দখল করার জন্য পদ্মা ও পলাশ ভারতের হলদিয়া বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে । সাথে ছিল মিত্রবাহিনীর গানবোট পানভেল । আসার পথে ৪ই ডিসেম্বর সুন্দরবনের কাছে আড়াই বানকিতে ‘চিত্রাঙ্গদা’ এই বহরে যোগদান করে । রাস্তায় কোন প্রকার বাধা বিপত্তি ছাড়াই এই বহর খুলনার হিরণ পয়েন্টে প্রবেশ করে । এখান থেকে প্রদিন ১০ই ডিসেম্বর খুব ভোরে মংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে তারা । চিত্রাঙ্গদা মংলার প্রবেশ পথে অবস্থান নেয় । চিত্রাঙ্গদাকে পাহারায় রেখে সামনে এগিয়ে বাকী গান বোর্ড গুলি । দুপুর বারোটা নাগাদ মংলার খুব কাছাকাছি চলে আসে তারা । কিন্তু হঠাৎ করে আকাশে তিনটি জঙ্গি বিমানের দেখা পাওয়া যায় । পদ্মা ও পলাশ গোলাবর্ষণের অনুমতি চায় । কিন্তু বহরের প্রধান জানান সেগুলি ভারতীয় বিমান । কপালের ফেরে ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিমান থেকে পাকিস্তানের নৌ জাহাজ ভেবে পদ্মা ও পলাশ এর উপর বোমা বর্ষণ শুরু হয় । পলাশের কম্যান্ডার সবাইকে গান বোর্ড ত্যাগ করার আদেশ দেন । কিন্তু রুহুল আমিনকে কোনোভাবেই পলাশ থেকে নামাতে রাজি করা যায়নি । তিনি পলাশেই অবস্থান নেন এবং আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন পলাশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাবার জন্য । কিন্তু হায়রে ভাগ্য ! হঠাৎ করে একটা বোমা এসে পড়ে পলাশের উপরে । পলাশের ইঞ্জিনরুম এ আগুন ধরে যায় সাথে সাথে । রুহুল আমিন – এর একটা হাত উড়ে যায় গোলার আঘাতে । শেষ সময় পর্যন্ত চেষ্টা করেও জাহাজটিকে বাঁচাতে পারলেন না তিনি । সবেমাত্র জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনী মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ‘বাংলাদেশের সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাবে ‘ ? এই একটা চিন্তাই বাংলার সাহসী সন্তান রুহুল আমিন-এর মাথায় ছিল । নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে জাহাজ বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি । যখন দেখলেন যে, জাহাজ বাঁচানো আর কোন মতেই সম্ভব নয়, তখন একেবারে শেষ মুহূর্তে, চরমভাবে আহত অবস্থায় জলে ঝাঁপ দেন তিনি । ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে এক হাত দিয়ে সাঁতরে যখন তিনি নদীর তীরে পৌঁছাল তখন সেখানে আড়ালে লুকিয়ে অপেক্ষা করছিল পাকহানাদারদের বিশস্ত রাজাকারের দল । আহত রক্তাক্ত রুহুল আমিনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তারা ।

বীরশ্রেষ্ঠ আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিনের জন্মস্থান নোয়াখালীর বাগপাদুরা গ্রামের নাম পরিবর্তন করে এখন রাখা হয়েছে তাঁর নামে আমিননগর। বাড়ির সম্মুখে বীরশ্রেষ্ঠর পরিবারের দেয়া ২০ শতাংশ জমিতেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নোয়াখালী জেলা পরিষদ ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছে রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার।

আজ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী (মঙ্গলবার) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন গ্রন্থাগ্রার ও স্মৃতি যাদুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয়। পরে দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে বাতাসে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পায় তারা।

চাটখিলে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

বেলায়েত হোসেন আশা করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসায় তিনি বিপুল ভোটে চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

চাটখিলে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত এর মতবিনিময়

নোয়াখালীর চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে চাটখিল উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সাংবাদিক মেহেদী হাছান রুবেল ভুঁইয়া’র পৃষ্ঠপোষকতায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিনি দেশবাসীকে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে কুরআন পাঠের আহ্বান জানান।

সারাদেশে অর্থসহ কুরআন পাঠ দিবস পালিত

Comments are closed.