হঠাৎ মহাসচিব বদল জাপায় নানা গুঞ্জন

107

নানামুখী অস্থিরতার মধ্যেই হঠাৎ পরিবর্তন করা হলো জাতীয় পার্টির মহাসচিব। এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে বাদ দিয়ে মশিউর রহমান রাঙাকে নতুন মহাসচিব নিয়োগ দিয়েছেন পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাৎক্ষণিক এক চিঠিতে মহাসচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে রাঙা জানিয়েছেন, বিদায়ী মহাসচিবের বিরুদ্ধে ওঠা মনোনয়ন বাণিজ্যের তদন্ত করা হবে। তবে কী কারণে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।

পার্টি চেয়ারম্যান গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে রাঙা জানিয়েছেন, তাকে দু-একদিনের মধ্যেই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হতে পারে। নতুন মহাসচিব নিয়োগের বিষয়ে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানিয়েছেন, ঘোষণার আগে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না। এদিকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদের অবস্থান নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে প্রেসিডেন্ট পার্কে অবস্থান করলেও তার সঙ্গে পার্টির নেতাকর্মীরা যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

এরশাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, নির্ধারিত কয়েকজন ছাড়া অন্য নেতাকর্মীরা প্রেসিডেন্ট পার্কে যেতে পারছেন না। কী কারণে এমনটি হচ্ছে এটিও তাদের জানা নেই। এই অবস্থায় হঠাৎ পার্টির মহাসচিব বদল রহস্যজনক। মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠার পর এরশাদ ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে সরিয়ে দিয়েছেন নাকি অন্য কোনো চাপে করেছেন, তাও পরিষ্কার নয় নেতাকর্মীদের কাছে। আবার তাকে বিদেশ পাঠানোর আলোচনার মধ্যেও রহস্য খুঁজছেন অনেকে। গতকাল এরশাদ এক আদেশে রাঙাকে মহাসচিব পদে দায়িত্ব দেন। আদেশের চিঠিতে এরশাদ উল্লেখ করেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মোতাবেক এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে- যা সোমবার সকাল থেকে কার্যকর হয়েছে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যের পাশাপাশি আপনি মহাসচিব পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

হঠাৎ মহাসচিব বদলের পর পার্টির একটি পক্ষ নতুন মহাসচিবকে নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করলেও অনেকেই আবার নাখোশ, যারা মুখ খুলেছেন না। এতদিন পার্টি অফিসে যারা অনপুস্থিত ছিলেন মহাসচিব পরিবর্তনের পর তারাও পার্টি অফিসে এসে হাজির হয়েছেন। অন্যদিকে যারা নির্বাচনের আমেজ শুরু হওয়ার পর পার্টি অফিসে থাকতেন তাদের গতকাল দেখা যায়নি।

একদিকে জাপা মহাসচিব পদে বদল অন্যদিকে পার্টির চেয়ারম্যানের অবস্থান নিয়ে কোনোভাবে রহস্য কাটছে না। নেতাকর্মীরা কেউ কিছু বলতে পারছেন না। এরশাদ কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন। নেতাকর্মীরা বলছেন, অনেকেই এরশাদের দেখা পাচ্ছেন না। এমনকি পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও তার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না। তাহলে এ সিদ্ধান্তগুলো কে নিচ্ছেন? অন্যদিকে এরশাদের অনুপস্থিতিতে পার্টির সিদ্ধান্তে যাদের সরব থাকার কথা তাদেরও দেখা যাচ্ছে না। পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের কেউ পার্টি অফিসে আসছেন না। তাদের অবস্থান কী তাও জানেন না পার্টির নেতাকর্মীরা। এরশাদ এ মুহূর্তে কী অবস্থায় আছেন, কেন তাকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না- এটা নিয়ে রয়েছে ধূম্রজাল। পার্টির মহাসচিব বদল হয়েছে অথচ চেয়ারম্যান কথা বলছেন না। তিনি মহাসচিব ঘোষণা করে আদেশের যে চিঠি দিয়েছেন তা নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমে রাঙাকে মহাসচিব ঘোষণার আদেশের চিঠিতে এরশাদের কোনো স্বাক্ষর নেই বলেও তারা জানান। এটা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে বলে জানান পার্টির কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা বলেন, হঠাৎ করে কী হলো কিছুই বুঝতে পারছি না।

পার্টির সিনিয়র এক নেতা বলেন, স্যারের সঙ্গে আমি দেখা করতে গিয়েও পারিনি। তার সঙ্গে কারো সাক্ষাৎ নেই। রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, তিনি পার্টির এত বড় ক্ষতি করেছেন, যা বলার নয়। জাপাকে অনেকটা শেষ করে দিয়েছেন। স্যার ক্ষোভে কারো সঙ্গে দেখা করছেন না। আরেকজন জানান, স্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই পার্টির দু’জন নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপরে বাসায় এসে অনেক নেতা ফিরে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, পার্টি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা কে জানে। তাহলে পার্টির ভবিষ্যৎ কি জানতে চাইলে বলেন, স্যার প্রকাশ্যে এসে কথা বললেই সেটা পরিষ্কার হতো।

এদিকে পার্টির নতুন দায়িত্ব পেয়ে বনানীর পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন নব-নিযুক্ত মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙা। তিনি জানান, পার্টির চেয়ারম্যান তার ক্ষমতা বলে তাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন। রুহুল আমিন হাওলাদারকে কেন অব্যাহতি দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে রাঙা বলেন, এটা একমাত্র পার্টির চেয়ারম্যানের এখতিয়ার। তাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা পালন করার চেষ্টা করবেন বলেও তিনি জানান।

রাঙা নির্বাচনের আগে পার্টির অবস্থান সম্পর্কে অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন সংগঠিত হয়ে ওঠে, তখন একটি অশুভ শক্তি দলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। মহাজোটের সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া জাপার নেতারা এখনও জানেন না মহাজোট থেকে জাপা প্রকৃতপক্ষে কতটি আসন পাবে। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সঞ্চারিত ক্ষোভ রয়েছে। কমপক্ষে তিন মাস আগে জানা উচিত ছিল, কারা আমাদের প্রার্থী হবেন। রাঙা পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য দু-একদিনের মধ্যে ‘দেশের বাইরে’ যেতে পারেন এরশাদ। আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন যেখানে ১২, স্যারের ১০। তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। আজ সকালেও আমি তাকে দেখে এসেছি। চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। দু-একদিনের মধ্যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারেন।

রাঙা বলেন, জাতীয় পার্টির সদ্য সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ অন্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের’ অভিযোগ তদন্ত করে বব্যস্থা নিবে জাপা। প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে একটি কমিটি করা হবে। যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাদের বিরুদ্ধে জাপার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এই অভিযোগের প্রসঙ্গে সত্যতা, অসত্যতা রয়েছে। নানা বক্তব্য আছে। কেননা জাপার মনোনয়ন না পেয়ে জাপার কয়েকজন নেতা বলেছিলেন, তারা টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাদের কাছে টাকায় আমরা হেরে গেছি। এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলছিলেন, অভিযোগকারীরা কোনো একটি পক্ষ থেকে টাকা খেয়ে তার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ করছে। এরই মধ্যে তাকে সরিয়ে দেয়া হলো। তবে রাঙা বলেন, মনোনয়ন নিতে এসে যারা লাঞ্ছিত হয়েছেন, যারা টাকা-পয়সা নেয়ার অভিযোগ এনেছেন, তারা যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান, তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। পটুয়াখালী-১ আসনে জাপার প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জামা দিয়েছিলেন জাপার সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। ঋণখেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করে দেয় রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে রাঙা বলেন, আপনারা জানেন, ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তার মনোনয়ন গৃহীত হয়নি। তবে মাননীয় চেয়ারম্যান তাকে কেন অব্যাহতি দিয়েছেন তা আমি বলতে পারবো না। হয়তোবা তিনি এ পদ থেকে অব্যাহতি চাইতে নিজেও বলেছেন।

মহাসচিব রাঙা আরো বলেন, যেসব সংসদ সদস্য ও নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন, তাদের বলব আপনারা ফিরে আসুন। চেয়ারম্যান স্যার আপনাদের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। এ সময় তিনি জানান, জাপা থেকে তিন বার তিনিও বহিষ্কার হয়েছিলেন কিন্তু পার্টি ছেড়ে যাননি। যে কারণে টানা ১৫ বছর ধরে তিনি প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে বাতাসে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পায় তারা।

চাটখিলে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

বেলায়েত হোসেন আশা করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসায় তিনি বিপুল ভোটে চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

চাটখিলে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত এর মতবিনিময়

নোয়াখালীর চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে চাটখিল উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সাংবাদিক মেহেদী হাছান রুবেল ভুঁইয়া’র পৃষ্ঠপোষকতায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিনি দেশবাসীকে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে কুরআন পাঠের আহ্বান জানান।

সারাদেশে অর্থসহ কুরআন পাঠ দিবস পালিত

Comments are closed.