সেনবাগে গরিবের চাল বেশি দামে বিক্রি, ২ আ.লীগ নেতা আটক
পরস্পর যোগসাজশে নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলার ৯নং নবীপুর ইউনিয়নে গরিবের জন্য সরকারের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় দেয়া ১০ টাকার চাল নিয়ে জালিয়াতি করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- ওএমএস চাল বিতরণ কর্মসূচির ডিলার ও ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান সাজু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ঈসমাইল হোসেন খান।
মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয় বলে সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, চাল চুরির দায়ে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন ডিলার অন্যজন তার সহযোগী। পরে ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে বিকেল ৫টা থেকে চাল চুরির অভিযোগে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম মজুমদার।
অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, গরিবের জন্য দেয়া চাল চুরি করা হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেখানে অভিযান চালাই। অভিযানে চুরির সত্যতা মিলেছে। ওই ডিলার (শাহজাহান) এক সহযোগীর (ঈসমাইল হোসেন খান) সহায়তায় এ জালিয়াতি করেছে। গরিব মানুষকে এ চাল না দিয়ে তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। অভিযানে ১৭ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে। গরিবের চাল চুরি করা এসব নেতার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গরিবের হক যারা মেরে খায় তাদের বিরুদ্ধে সরকার যে ব্যবস্থা নেবে, আমরা সেক্ষেত্রে সহায়তা করব। সে যদি আমার ভাইও হয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ইউএনওর সঙ্গে এখনই কথা বলব। যদি তারা এটা করে থাকে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
এদিকে এই দুই আওয়ামী লীগ নেতার চাল চুরির ঘটনাটি বেশ কয়েকজন স্থানীয় তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেন। তাদের বর্তমানে ওই নেতাদের অনুসারীরা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, আমি এখনই খবর নিচ্ছি। যারা বিষয়টি তুলে ধরেছে তাদের আমি পুরস্কৃত করব। তারা খারাপ কাজ করেনি। তাদের আমি সহায়তা করব। যারা জনগণের হক না হক করেছে তারা তাদের ধরিয়ে দিয়েছে, তাদের আমি অভিনন্দন জানাই।
আটক দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এলাকার চিহ্নিত গরিবদের তালিকায় না রেখে এমন লোকদের তালিকায় রাখা হয়েছে যাদের অনেকে এ চাল উত্তোলন করে না। পরবর্তীতে এ চাল বেশি দামে বিক্রি করা হয়। করোনার এই দুর্যোগকালীন সময়েও তারা কার্ডধারীদের কাছ থেকে প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা করে বেশি রেখেছেন। এছাড়া উত্তোলন না করা চালের বস্তা ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি করেছেন।
Comments are closed.