লক্ষ্মীপুর চার আসনের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হালচাল

167

আসন্ন ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরে ৪টি আসনেই হেভিওয়েট প্রার্থীদের মুখোমুখি লড়াইয়ে ক্রমান্বয়ে সরগরম হয়ে উঠছে। হেভিওয়েটদের নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটাররাও নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছেন। সরগরম হয়ে উঠছে চায়ের দোকান হাট-বাজার অফিস পাড়াও। বৈরী আবহাওয়াতেও প্রার্থীরা ছুটেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে রাতে বিরাতে প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জাগিয়ে তুলছেন ও উঠান বৈঠক করে বেড়াচ্ছেন।

সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থী ও প্রার্থীদের নির্বাচনী দল ভোটারদের কাছাকাছি আসতে চেষ্টা করছেন। মন জয় করার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গভীর রাতেও জনসংযোগ ও পথসভা করতে দেখা যাচ্ছে প্রার্থীদের।

লক্ষ্মীপুর-১ সংসদীয় আসন রামগঞ্জ। আওয়ামীলীগ মনোনীতপ্রার্থী (মহাজোট প্রার্থী বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরবর্তীতে কাছে টেনে নিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী করে দেন) ডা. আনোয়ার হোসেন খান। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি লড়ছেন এলডিপি মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের ধানের শীষ প্রতীকের সাথে।

সফল উদ্যোক্তা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন খান মূলত রাজনীতিবিদ না হলেও তার আসনে গ্রহণযোগ্যতায় তিনি এগিয়ে আছেন। বিভিন্ন সময় স্কুল কলেজ মাদ্রাসা মসজিদ মন্দির কিংবা রামগঞ্জবাসীর যেকোনো সমস্যা হলে তিনি পাশে দাঁড়াতেন এবং সহযোগিতাও করতেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বিভিন্ন স্কুল মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে টিফিন বক্স বিতরণ করাসহ জামা কাপড় বিতরণ করেছেন।

আনোয়ার হোসেন খানের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

এলডিপি প্রার্থীকে নিয়ে রামগঞ্জে বিএনপি তাদের হারানো আসন উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করছেন বলে এলাকায় ঘুরে দেখা যাচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ধানের শীষের সমর্থকেরা ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

আনোয়ার খান ব্যবসায়ী হলেও দমবার পাত্র নন। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রামগঞ্জ আসনটি উপহার দেবেন। সে মোতাবেক তিনি ও তার দল লোকজন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা সর্বশক্তি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আনোয়ার খান নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি। সবার কাছে ভোট চাচ্ছি। আশা করি, রামগঞ্জ আসনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবো।’

লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সংসদীয় আসন, বিএনপি-জামায়াত অধ্যূষিত এলাকা তার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসন এটি। যদিও তিনি এবার নির্বাচন করছেন না।

অন্যদিকে, কুয়েত মারাফিয়া কোম্পানীর চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল আপেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন।

নিজ দলীয় ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির সহযোগিতা না পেয়ে এমনকি ৩দিনের আলটিমেটাম দেয়া সত্বেও স্বতন্ত্রপ্রার্থী শহীদ ইসলাম পাপুল নির্বাচন প্রত্যাহার না করায় মোহাম্মদ নোমান নিজেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও শিল্পপতি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সাথে ধানের শীষ ও আপেল প্রতীকের লড়াই হবে।দিন দিন শহিদুল ইসলাম পাপুল আপেল মার্কার ভোট বাড়ছে বলে জানা যায়।

অন্যদিকে, সিংহ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী রয়েছেন ফয়েজ আলম টিটু। রাজনৈতিক মতাদর্শে সে কোনো দলেরই না বলে জানা গেছে। যেহেতু আবুল খায়ের ভূঁইয়া তিনবারের নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন এবং বিএনপি-জামায়াতের অধ্যূষিত এলাকা সেহেতু তার জনপ্রিয়তা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

অন্যদিকে আওয়ামীলীগের ঘরের মানুষ কেউ না থাকায় এমনকি মহাজোটপ্রার্থী মোহাম্মদ নোমান নির্বাচন প্রত্যাহার করায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলই একমাত্র ভরসা হয়ে উঠছেন আওয়ামীলীগ ও মহাজোট নেতাকর্মীদের।

লক্ষ্মীপুর-৩ সংসদীয় আসন সদর আওয়ামীলীগ মনোনীত বেসরকারি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল নৌকা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন। বিএনপি চাইছেন তাদের হারানো আসন উদ্ধার করতে আর ক্ষমতাসিন সরকারের মন্ত্রী হেভিওয়েট প্রার্থী শাহজাহান কামাল চাইছেন তাদের আসনটি ধরে রাখতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সম্পাদক বরাবর প্রেরিত এক মেইল বার্তায় সবার প্রতি অনুরোধ করেছেন যে-প্রার্থী না দেখে নৌকা প্রতীককে জয়যুক্ত করতে, মহাজোট প্রার্থীদের বিজয়ী করতে। তবে আশা করা যায় আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে তারা শাহজাহান কামালকে বিজয়ী করতে সবাই একমত পোষণ করবেন।

লক্ষ্মীপুর-৪ সংসদীয় আসন কমলনগর-রামগতি। মেঘনা উপকূলীয় দুইটি উপজেলা নিয়ে লক্ষ্মীপুর-৪ সংসদীয় আসন গঠিত। বিকল্পধারার মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অবঃ) আব্দুল মান্নান নৌকা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আ স ম রব ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন। এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থী মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত হয়ে তারা নির্বাচনে প্রার্থিতা করছেন।

মেজর (অবঃ) আব্দুল মান্নান নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। অন্যদিকে আ স ম রব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। কমলনগর রামগতি ধানের শীষ অধ্যূষিত এলাকা হলেও এবার নির্বাচনে মহাজোটপ্রার্থী শিল্পপতি মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নান ভোটের রাজনীতিতে এগিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন।

মেজর (অবঃ) মান্নান কমলনগর রামগতিকে বাঁচানোর জন্য মেঘনা নদী শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনসংযোগ পথসভা করলেও ঐক্যফ্রন্টের নেতা হয়ে আ স ম রব জাতীয় প্রোগ্রাম করছেন।

এ নিয়ে বিএনপির সাবেক তিনবারের এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, ‘আমরা প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। নেতাকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা ভালো-মন্দ দেখছি। রব সাহেব কেন্দ্রীয় নেতা, তিনি জাতীয় প্রোগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন, এদিকে হাতে বেশি সময় নেই।’

সবমিলিয়ে লক্ষীপুরের ৪টি আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী লড়াই। এ অবস্থায় সবাই তাকিয়ে আছে ৩০ ডিসেম্বরের দিকে। কারা হবে এই জেলার ৪টি আসনে সংসদ সদস্য? তবে যারাই আসুক তারা যেন এই জেলার উন্নয়ন করেন, সেটাই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।A

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে বাতাসে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পায় তারা।

চাটখিলে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

বেলায়েত হোসেন আশা করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসায় তিনি বিপুল ভোটে চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

চাটখিলে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত এর মতবিনিময়

নোয়াখালীর চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে চাটখিল উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে চাটখিল কামিল মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সাংবাদিক মেহেদী হাছান রুবেল ভুঁইয়া’র পৃষ্ঠপোষকতায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চাটখিলে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিনি দেশবাসীকে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে কুরআন পাঠের আহ্বান জানান।

সারাদেশে অর্থসহ কুরআন পাঠ দিবস পালিত

Comments are closed.