লক্ষ্মীপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিরন হত্যার রহস্য উম্মোচন, অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার
লক্ষ্মীপুরের দত্তপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম মিরন হত্যার রহস্য উম্মোচন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় পুলিশ সুপার সস্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ হত্যার রহস্য উম্মোচন হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার ড.এ এইচ এম কামরুজ্জামান।
জানা গেছে, পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সোমবার সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলার বটতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিরন হত্যা মামলার ২নং আসামি মো. জসিম (২৪) কে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে উক্ত আসামি হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের সন্ধান দেন।
তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক সোমবার বিকেল ৪টার দিকে চরচামিতা মিজি বাড়ীর সামনের নির্মানাধীন ঘরের বালুর নিচ থেকে ২টি লম্বা বন্দুক, ২টি এলজি, ২৬ রাউন্ড গুলি, ২টি ড্রেসার লাইট, ২টি মাফলার উদ্ধার করা হয়।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার বলেন, মিরন হত্যা একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। পারিবারিক বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গত ১১ অক্টোবর হত্যা মামলার আসামি সিএনজি চালক জামালকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত নম্বর বিহীন সিএনজি অটোরিক্সা উদ্ধার করা হয়। পরে সে বিজ্ঞ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে। এছাড়া হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামি ইলিয়াছ কোবরা গত ১৪ অক্টোবর দত্তপাড়া ইউনিয়নে দুই বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১টি একনলা বন্দুক, ২রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, অপরাধী যে হোক না কেন কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। লক্ষ্মীপুর থেকে সন্ত্রাস, মাদক দূর করতে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন সড়কে সিএনজি অটোরিক্সা থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। এরপরও কেউ যদি চাঁদা আদায় করে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের কেউ জড়িত থাকলেও তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না, প্রয়োজনে তাকে অনত্র বদলি করা হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন, ডিআই ওয়ান মো. ইকবাল হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ, লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল’ জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ’সহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলোক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য : গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের আলাদাদপুরে খোরশেদ আলম মিলনকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মিলন দত্তপাড়া ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক ও ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিলেন।
Comments are closed.