নোয়াখালীতে ঘটে গেলো এক হৃদয় বিদারক ঘটনা
‘ছোট বোন আর মা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আমি আর মেজ বোন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছি। আর কোনো দিন পড়াশোনা ও দুষ্টমির জন্য মা আমাদের বকা দেবেন না।’ বুধবার বিকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব কথা বলছিলেন সেঁজুতি দে (১১)। তিনি বুধবার সড়ক দুঘটনায় নিহত স্কুল শিক্ষিকা পলি রাণী মজুমদারের বড় মেয়ে।
নোয়াখালীর চৌমুহনী চৌরাস্তা-সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে মজুমদারহাটে ছালামের চা দোকান এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে পিকআপভ্যান ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে পলি রাণী ও তার এক মেয়ে মারা যায়।
সেঁজুতির বড় চাচা ও চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা অরুণ চন্দ্র দে জানান, তার ছোট ভাই গনেশ চন্দ্র দে ঢাকার কাঁচপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার স্ত্রী পলি রাণী মজুমদার (৩৫) একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। পলি তার তিন মেয়েকে নিয়ে বের হন বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে। সকাল ৯টার দিকে তাদের বহনকারী অটোরিকশাটি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপভ্যান তাদের চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি ধুমড়ে মুচড়ে পলি ও তার ছোট মেয়ে নিধি ঘটনাস্থলে নিহত এবং সেঁজুতি ও মেঘা আহত হন।
আহতদের মধ্যে সেঁজুতির মাথা, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক জখম হয়। মেঘা কিছুটা শঙ্কামুক্ত হলেও সেঁজুতির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে চৌমুহনী পৌর মহাশ্মশানে গিয়ে দেখা গেছে, নিহতদের স্বজনদের কান্নায় শ্মশান এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা ৭টার সময় চৌমুহনী পৌর মহাশ্মশানে প্রথমে নিধি ও পরে পলি রাণী মজুমদারের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নিহতদের স্বজন, সহকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
Comments are closed.