সেনবাগের আলোচিত বিধবা গণধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামী গ্রেপ্তার

0 64

সেনবাগের ছাতারপাইয়ার চিলাদিতে আলোচিত বিধবা গণধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামী সেলিম (২৪) কে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার রাত ১১টায় কেশারপাড় ইউপির ইটবাড়ীয়া রাস্তার মাথা নামক স্থান থেকে পিবিআই তাকে গ্রেপ্তার করে। সে ছাতারপাইয়া মজুমদার পাড়ার মিনার হোসেনের পুত্র। ২০ ফেব্রুয়ারি ছাতারপাইয়ায় পুত্রের গলায় চুরি ধরে জরিনা বেগম (৪০) নামের এক বিধবাকে রাতভর গণধর্ষণ করা হয়। তিন সন্ত্রাসী মাদক ও চোরাকারবারী সেলিম (২৪), রুবেল (২০) ও নুরনবী (২৬) পাশবিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে প্রাণপন চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি বিধবার। পুত্র জায়েদুল (১২) এর চিৎকার শুনেনি তিন নরপশুরা। রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত টানা নির্যাতনে বিধবা জ্ঞান হারালে সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে পালিয়ে যান। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটনাটি ঘটলেও ছাতারপাইয়া বাজারে বিচারের নামে প্রহসন তিন ধর্ষকের দশবার কানে ধরে ওঠবস করিয়ে ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিষয়টি নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় মাছ কাশেম ও হানিফসহ সালিশদাররা তিন নরপশুকে বাঁচানোর চেষ্টার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে গণমাধ্যমকর্মীরা সক্রিয় হলে পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টনক নড়ে। ওইদিন সেনবাগ থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এসআই রফিকুল ইসলাম ও এএসআই সাহিদুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত রুবেল ও নুরনবী, সালিশদার মাছ কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিকটিম জানান, ৩ মাস আগে স্বামী আবদুল মতিন মারা যায়। ২০ তারিখ চট্রগ্রামের কর্মস্থল থেকে চিলাদী ব্যাপারী বাড়ির স্বামীর কবর জিয়ারত ও দেড় বছরের পুত্র জুনায়েদকে দেখতে বড়পুত্র জায়েদুলকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওয়না দিয়ে রাত ১০টায় ছাতারপাইয়া বাজারে পৌঁছায়। এসময় জনৈক সেলিমের রিক্সা ভাড়ায় নিয়ে এক কিলোমিটার সামনে গিয়ে রিক্সাচালক থামিয়ে ফোনে কথা বলতে না বলতেই আরো দুই যুবক ঘটনাস্থলে এসে টেনে হিচড়ে পাশের খালপাড়ে নিয়ে সারারাত পাশবিক নির্যাতন চালায়। পুত্র জায়েদুল মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তার গলায় চুরি বসিয়ে হত্যার হুমকি দেয় নরপশুরা। পরে ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে ছাতারপাইয়া-তেমুহনী রোডের ছালা উদ্দিনের ফার্নিচার দোকানে এক শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্ষণ ঘটনায় জড়িত রুবেল ও নুরনবীকে হাজির করা হলেও মুলনায়ক মাদক সম্রাট সেলিম থাকে ধরাছোয়ার বাইরে। তার অনুপস্থিতিতে সালিশদার হানিফ ও আবুল কাশেম ওরপে মাছ কাশেম আসামী রুবেল ও নবীকে ১০ বার করে কান ধরে ওঠবস করায় এবং দুজনের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করেন। আর সেলিমের অনুপস্থিতিতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। স্থানীয় অনেক লোকজন ও ভিকটিমের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে দুই মাতব্বর ধর্ষকদের কিভাবে কানে ধরে ওঠবস করে অপরাধীদের ছেড়ে দিলেন ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে, ভিকটিমকে জোর করে ধর্ষক অপরাধীদের কান ধরে পা ধরাচ্ছে বিচারকরা। অপরাধীদের পার পেতে একটি প্রহসনমূলক বিচার করা হয়। তিনজনই ওই জনপদের মাদক সম্রাট। ভিকটিমের দায়ের করা মামলায় ৩ জন গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামী সেলিম পালিয়ে বেড়ায়। এর মধ্যে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর হলে গত ২১ এপ্রিল রাতে গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইটবাড়িয়া রাস্তার মাথা থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।