লাখ টাকা পেয়ে স্বামীকে মোটরসাইকেল দিলেন মর্জিনা

170

জীবিকার তাগিদে আড়াই বছর আগে ওমান যান আবদুল মান্নান। কঠোর পরিশ্রম করে যতটা সম্ভব পরিবারের জন্য নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। স্ত্রী মর্জিনা আক্তার সেই টাকা থেকে অল্প অল্প করে জমাতে থাকেন ফ্রিজ কিনবেন বলে। একসময় জমে যায় ১০ হাজার টাকা। সেটা দিয়ে কিস্তিতে একটি ওয়ালটন ফ্রিজ কেনেন তিনি। সেই ফ্রিজে কিনে মিলে যায় ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। যা মর্জিনার কাছে ছিল অকল্পনীয়। ভাগ্যগুণে পাওয়া সেই লাখ টাকা দিয়ে স্বামীর জন্য একটি ওয়ালটন মোটরসাইকেল কিনেছেন তিনি।

বাড়িতে টেলিভিশন বা অন্য কোনো গৃহস্থালি পণ্য না থাকার পরও ক্যাশ ভাউচারের টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কেন কিনেছেন, তা জানতে চাইলে মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘স্বামীর কষ্টের টাকা দিয়ে ফ্রিজ কিনে লাখ টাকা পেয়েছি। তাই সেই টাকা দিয়ে স্বামীর জন্য একটি মোটরসাইকেল কিনেছি।’

মর্জিনা আক্তার জানান, তার শ্বশুরবাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার ফতেপুর গ্রামে। ২০০৮ সালে আবদুল মান্নানের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। দুই মেয়ে তাদের। বড় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। ছোট মেয়েটি এখনো স্কুলে যাওয়া শুরু করেনি।

মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘টিভি-ফ্রিজ ব্যবহারের অনেক শখ ছিল। কিন্তু গরিব পরিবারে বিয়ে হয়েছে। শ্বশুরবাড়িতে এ ধরনের কোনো জিনিস ছিল না। প্রথমদিকে পাড়া প্রতিবেশীদের টিভি থাকলেও ফ্রিজ কোনো ঘরে ছিল না। তবে বর্তমানে আশপাশের অনেক বাড়িতে ফ্রিজ শোভা পেলেও আমাদের বাড়ি আগের মতোই রয়েছে। ফ্রিজের মতো দামি জিনিস ব্যবহার করা আমাদের কাছে শুধুই স্বপ্ন। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণে আমি ছিলাম নাছোড়বান্দা।’

তিনি আরো বলেন, ‘পরিবারের অভাব দূর করতে আড়াই বছর আগে কাজের জন্য ওমান পাড়ি দিয়েছেন আমার স্বামী। সেখান থেকে পরিবারের খরচ চালাতে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। সেই টাকা থেকে কিছু কিছু করে জমিয়ে ফ্রিজ কেনার পরিকল্পনা করি। ওয়ালটন কোম্পানির ফ্রিজ কিনব তা আগে থেকেই ঠিক ছিল। কারণ, আমাদের এলাকাতে যাদের বাসায় ফ্রিজ আছে তার সবই ওয়ালটনের। আমার বাবার বাড়িতে গত ছয় বছর আগেও একটি ফ্রিজ কেনা হয়। সেটিও ওয়ালটনের। তাছাড়া আশপাশের অনেকেই ওয়ালটন ফ্রিজ কেনার ব্যাপারে পরামর্শ দেন। কারণ, ওয়ালটন জিনিস ভালো। দামও কম।’

মর্জিনা আক্তার জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১২ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর চাটখিল ওয়ালটন প্লাজায় যান তিনি। সেখান থেকে দেখে-শুনে ১১ সিএফটি আয়তেনর একটি ফ্রিজ পছন্দ করেন। যার দাম ২৪ হাজার ৫০০ টাকা। ১০ হাজার টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ফ্রিজটি কেনেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন পণ্য কিনে উপহার পাওয়া যাবে তা আগে থেকে জানতাম না। কারণ, বাজার-ঘাটে তেমন একটা আসা পড়ে না। তবে ফ্রিজ কেনার সময় প্লাজার কর্মকর্তারা আমাকে জানিয়েছিলেন। তারাই নিয়ম অনুযায়ী আমার মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে দেন। পরে ফ্রিজটা ভ্যানে পাঠিয়ে আরো কিছু কেনাকাটা করি। এ সময় মোবাইলে ম্যাসেজ আসে। তবে মোবাইল কোম্পানির ম্যাসেজ মনে করে সেটা আর পড়ে দেখি নাই। পরে প্লাজার কর্মকর্তারা আমাকে ফোন দেন। তারা মোবাইলে এসএমএস দেখার কথা বলেন।’

মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘তাদের ফোন পেয়ে ভাবলাম কোনো জিনিস হয়তো ভুলে রেখে এসেছি। পরে বিষয়টি কী জানতে আবার প্লাজায় যাই। এ সময় তারা আমাকে বলেন যে, আমি নাকি অতি সৌভাগ্যবান। আমার কপাল খুলে গেছে। আমি পেয়েছি ওয়ালটন অফারের সবচেয়ে বড় মানের উপহার অর্থাৎ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। এটা আমার পক্ষে বিশ্বাস করার মতো ছিল না। আমার মতো গরিব মানুষ ১ লাখ টাকার পুরস্কার পাবে, এটা ভাবতেও আমার মনে ভয় লাগে। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আমার সব আত্মীয়-স্বজন অনেক খুশি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ফ্রিজ ব্যবহার করার শখ থাকলেও অভাবের কারণে তা কখনো পূরণ হয়নি। দীর্ঘদিন পর কিস্তিতে শখের সেই ফ্রিজটি কিনেছি। আল্লাহ তায়ালার কী রহমত! ওয়ালটন থেকে সেই ফ্রিজটি কিনেই ১ লাখ টাকা পেয়েছি। আমার ভাগ্যে এমন উপহার প্রাপ্য ছিল তা কখনো বুঝতে পারিনি। ওয়ালটনের কারণেই বুঝতে পারলাম যে, আমি ভাগ্যবান। ধন্যবাদ ওয়ালটনকে।’

ওয়ালটন পণ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ হওয়াতে এ ধরনের দামি দামি জিনিস কেনা হয়নি। এমনকি আগে কখনো ওয়ালটন পণ্য ব্যবহারও করিনি। তবে সবাইকে ভালো বলতে শুনেছি। আমি ওয়ালটন কোম্পানি ও তার সকল কর্মকর্তাদের জন্য দোয়া করছি।’

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

আরও পড়ুন

Comments are closed.