লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

69

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মো. বাবুল হোসেন নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময়ে সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক (কনসালটেন্ট কার্ডিওলোজি) হাসপাতালে ছিলেন না। তিনি প্রাইভেট ক্লিনিকে ব্যস্ত ছিলেন নিহত রোগীর স্বজনের এমন অভিযোগ। একই সঙ্গে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অন্যান্য রোগীরাও ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রেরণ করার অভিযোগ করেন।

দুপুর দেড়টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আহাজারীতে হাসপাতালের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। স্বজন হারিয়ে এভাবেই আর্তনাত করতে থাকেন রোগীর স্বজনরা। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের দুপুর দেড়টার দিকের চিত্র এটি।

স্বজনরা জানায়, বুকে ব্যাথা নিয়ে দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হন সাহাপুর এলাকার বাবুল হোসেন। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফ, তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হৃদরোগ বিভাগের কনসালটেন্ট ভবানী প্রসাদের কাছে পাঠান। কিন্তু এসময় হাসপাতালে ছিলেন না তিনি। ফোন করা হলে জরুরি কাজে বাইরে আছেন বলে জানান ভবানী প্রসাদ। পরে সিভিল সার্জনকে ফোন দেয়া হলে অন্য চিকিৎসকে পাঠান তিনি। তবে এর আগেই মৃত্যু হয় বাবুল হোসেনের।

চিকিৎসক ডা. ভবানী প্রসাদ রায় বলেন, ব্যক্তিগত কাজে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য হাসপাতালের বাইরে গেছেন বলে স্বীকার করেন। তবে রোগীর অবস্থা খারাপ থাকায় মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে সঠিক ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অন্যান্য সেবা গ্রহিতারাও অভিযোগ করেন, তিনি তার প্রাইভেট ক্লিনিকে (শুভ হার্ট, মেডিসিন এন্ড কনসালটেশন সেন্টার) যেতে রোগীদের প্রভাবিত করেন।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওইদিন অর্থাৎ সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর ১ টা ৫৭ মিনিটে তার প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায় তিনি ব্যস্ত রয়েছেন রোগী দেখা কাগজপত্র (ব্যবস্থাপত্র) ঠিক করতে। ক্যামেরা দেখে তিনি সরিয়ে ফেলেন কাগজপত্র। এসময় সরকারি হাসপাতালে না থেকে প্রাইভেট ক্লিনিকে কি করছেন জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। এক পর্যায়ে কিছু না বলেই বের হয়ে পালিয়ে যান তিনি।

এদিকে চিকিৎসা অবহেলায় রোগী মৃত্যুর বিষয়টি কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মোস্তফা খালেদ আহমদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কোন মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়, ঘটনার সময়ে দায়িত্বরত চিকিৎসককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

Comments are closed.