রামগঞ্জে যৌতুকের বলি গৃহবধূ ছালমা, আঘাতের চিহ্ন থাকলেও থানা অভিযোগ নেয়নি
চাহিদা মাফিক যৌতুক না দেওয়ায় বলি হলো লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের গৃহবধূ ছালমা। অভিযোগ রয়েছে, পাষন্ড স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজন রামগঞ্জের উত্তর দরবেশপুর ধনগাজী বেপারি বাড়ির ৬ মাসের গর্ভবতী সালমা বেগমকে (২১) অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে । গত ২৭ এপ্রিল গভীর রাতে গোপনে গৃহবধূ ছালমার লাশ নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এ সময় উপস্থিত লোকজনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছালমার আত্মীয়-স্বজনের দাবি, বিগত ২০১৫ সালে উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের সর্দার বাড়ির মো. ইদ্রিছের ছেলে মো. সোহেলের সাথে ছালমার বিয়ে হয়। এরপর স্বামী সোহেল ছালমাকে ঢাকা সাভার থানার হাইছানোদ্দার রহিমা ভিলায় নিয়ে যায়। এরপর শুরু হয় যৌতুকের জন্য নির্যাতন। এতে করে বিভিন্ন সময় ছালমার পিত্রালয় থেকে ধাপে ধাপে সোহেলকে ৫ লক্ষধিক টাকা দেওয়া হয় বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। এরপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ছালমা রামগঞ্জের পিত্রালয়ে পালিয়ে এসে স্থানীয় চেয়ারম্যান পরিষদে অভিযোগ দায়ের করেন।
এতে সোহেল ও তার মা বোনেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছালমার পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছালমাকে আবার নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে গত ৬ দিন পূর্বে ছালমার বাবা আবদুর রহিম ছালমাকে দেখতে গেলে সোহেল তাকে নানাভাবে অপমানসহ প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এরপর গত বুধবার ২৫ এপ্রিল নির্যাতনের মাধ্যমে ছালমাকে হত্যা করা হয়।
পরদিন বৃহস্পতিবার পরিকল্পিতভাবে তাঁর শশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন মাধ্যমে ছালমার মৃত্যু সংবাদ পাঠায়। সাথে সাথে ছালমার মা পারভীন বেগম, ফুফু শাহনাজ বেগম, ফুফা মো. মিজান, ভগ্নিপতি মহসিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ছালমার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়। কিন্তু এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা থানার দারস্থ হলেও পুলিশ তাদের অভিযোগ গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
এরপর ময়না তদন্ত শেষে তাঁরা শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সুকৌশলে রামগঞ্জের পিত্রালয়ে নিয়ে আসে ছালমাকে। এ সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।