মোহাম্মদপুর গ্রামে শুরু হয়েছে জামাতে সালাত আদায় ও উত্তম চরিত্রের প্রতিযোগিতা

নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত চাটখিল উপজেলাধীন মোহাম্মদপুর গ্রামে টানা ৪০ দিন তাকবীরে উলার সহিত জামাতে সালাত আদায় এবং উত্তম চরিত্রের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দুটি পুরষ্কার ঘোষণা করেছে ‘আলোর পথে’ নামক অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুক্রবার গ্রামের ১৭টি জামে মসজিদের খতিব সাহেবগণ জুম্মার নামাজের খুৎবায় নিজ নিজ মসজিদ থেকে একযোগে এসব পুরষ্কারের ঘোষণা দেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘আলোর পথে’ সংগঠনের নোয়াখালী জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. দিদার হোসেন বলেন, ‘নবী’র নামে নাম, আমাদের এই মোহাম্মদপুর গ্রাম। এই মোহাম্মদপুর গ্রামের বিশ্বাসী সকল মুসলমানের চরিত্র যদি নবী চরিত্রের রঙে রঙ্গিন করা যায়, তবে আমার বিশ্বাস মোহাম্মদপুর গ্রাম হবে বাংলাদেশের অন্যতম আলোকিত একটি গ্রাম। গ্রামের বিশ্বাসী সকল মুসলমানের চরিত্র উন্নত থেকে উন্নততর করার লক্ষ্যেই এই দুটি পুরষ্কারের প্রবর্তন।

সালাতের এই পুরষ্কার মানুষের চরিত্রকে কিভাবে উন্নততর করবে এই প্রশ্নের জবাবে দিদার হোসেন বলেন, সালাত শব্দটির ধাতুমূলের অর্থ ‘সংযোগ’। অর্থাৎ সালাতের মাধ্যমে আমরা দৈনিক পাঁচবার আল্লাহ্‌র সাথে পুনঃ পুনঃ সংযোগের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বুখারী শরীফের হাদিস থেকে আমরা জানি, সালাতে মুমিন বান্দা আল্লাহ্‌র সাথে নীরবে কথোপকথন করেন। আমরা বিশ্বাস করি সালাতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহ্‌র সাথে আমাদের সংযোগ প্রক্রিয়া যত বেশী কার্যকর করতে পারবো, সেই সংযোগ ধীরে ধীরে আমাদেরকে সালাতের বাহিরেও যাবতীয় মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখবে; ঠিক যেমনি আল্লাহ্‌ তাঁর পবিত্র কালামে বলেছেন, নিশ্চয়ই সালাত মানুষকে সকল প্রকার অন্যায় ও অশোভন আচরণ থেকে বিরত রাখে (সুরা আনকাবুতঃ ৪৫)।

উত্তম চরিত্রের পুরষ্কার কিভাবে সমাজের মুল্যবোধের অবক্ষয়রোধে ভূমিকা রাখবে তার উত্তরে তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র পবিত্র কোরআন এবং রাসুলের প্রকৃত হাদিস থেকে দেখা যাচ্ছে, কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাতের পাশাপাশি মানব চরিত্রের আরো বেশ কয়েকটি দিক আছে যা আমাদের জাহান্নামের ভয়ংকর আজাবের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং জান্নাতের পাথেয় হিসেবে কাজ করবে। যেমন : কোরআনের অনেক আয়াত এবং রাসুলের অনেক হাদিস থেকে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে, সামনে বা পিছনে মানুষের নিন্দা, সমালোচনা, গীবত করা, মিথ্যা কথা বলা, অপ্রয়োজনীয় কথা বা কাজ করা, অহংকার করার শাস্তি হিসেবে আমাদেরকে জাহান্নামের ভয়ংকর আগুনে জ্বলতে হবে। অপরদিকে, মানুষের সাথে কোমল আচরণ করা, মানুষকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদা রক্ষা করা, সকল প্রতিকূলতায় ধৈর্য ধারণ করার পুরষ্কার হিসেবে আমরা পাবো চিরস্থায়ী জান্নাত। উপরোল্লিখিত মন্দ কাজসমূহের শাস্তি যে জান্নামের ভয়ংকর আগুন এবং ভাল কাজসমূহের পুরষ্কার যে জান্নাত- এই সচেতনতা যদি মোহাম্মদপুর গ্রামের প্রত্যেকটি বিশ্বাসী মুসলমানের মধ্যে ডেভেলপ করা যায় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি আমাদের গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষের নৈতিক চরিত্র আরো অনেক বেশী সুন্দর হবে।