বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই

87

ডেস্ক রিপোর্ট : স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবি (৬২) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। শুক্রবার রাত ১টা ২৭ মিনিটে তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে ইন্তেকাল করেন।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস, ডায়াবেটিস আর শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গত মাসেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকা সিএইচএম হসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল।

তার স্বামী ও দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

শনিবার দুপুর ২টায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে রাজিবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া তালতলা কবরস্থানে তারামন বিবির লাশ দাফন করা হয়। এর আগে সেখানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ গার্ড অব অনার প্রদান করে।

এরপর তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজনৈতিক নেতা, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন। এ সময় দোয়া অনুষ্ঠানের জন্য তারামনের সন্তানদের হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন।

তারামন বিবি চররাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম আবদুস সোহবান, মায়ের নাম কুলসুম বিবি। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ।

১৯৭১ সালে তারামন বিবি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন। তখন ১১নং সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য উৎসাহিত করেন।

তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন তারামনের বয়স ছিল ১৩-১৪ বছর। কিন্তু পরে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান।

তারামন অনেক সম্মুখযুদ্ধে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অংশ নেন। অনেকবার তাদের ক্যাম্প পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করেছে, তবে তিনি প্রতিবার বেঁচে যান। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তারামন বিবিকে ‘বীরপ্রতীক’ উপাধি দেয়।

কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। সেই সময় তাকে নিয়ে পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়।

অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তারামন বিবিকে বীরত্বের পুরস্কার তার হাতে তুলে দেয়।

শোক : তারামন বিবির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম।

দোয়া ও স্মরণ : তারামন বিবিকে স্মরণ ও তার জন্য দোয়া করা হয়েছে। যুগান্তর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, তারামন বিবিকে স্মরণ করেছে ‘শহীদ রফিক সামাজিক কল্যাণ পরিষদ’। সংগঠনের সদস্যরা শনিবার বিকালে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তারামন বিবির কর্মের ওপর আলোচনার মধ্য দিয়ে তাকে স্মরণ করেন।

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, শনিবার বরগুনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুব আলম, সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহীন খান, প্রেস ক্লাবের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার প্রমুখ।

আরও পড়ুন

নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন সহকারী প্রোগ্রামার,ইউআইটিআরসিই, ব্যানবেইস মো.জহির উদ্দিন।

নারায়নপুর আর কে উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি গঠন,আবু তালেব সদস্য নির্বাচিত

এ সময় বক্তারা আদালতের রায় ও ডাক্তারের চিকিৎসা পত্র বাংলা ভাষায় লিপিবদ্ধ করার জন্য জোরালো দাবি জানান।

চাটখিল কামিল মাদ্রাসায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

অল্পদিনের মধ্যেই এখানকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো অন্যায়, অবিচার, অনিয়ম ও চাঁদাবাজ আমার কাছে প্রশ্রয় পাবে না।

নিজ এলাকায় জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন এইচ এম ইব্রাহিম এমপি

মফস্বলে সাংবাদিকতা করা একটা চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম।

মফস্বল সাংবাদিকতা করা একটা চ্যালেঞ্জ – এইচ এম ইব্রাহিম

Comments are closed.