বিস্ময়কর মহাবিশ্বের ৭ টি অজানা তথ্য
সুবিশাল এই মহাবিশ্বের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ জুড়ে আমাদের বসবাস। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অসাধারণ উন্নতির পরেও তাই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধিকাংশই আমাদের কাছে রহস্যে ঘেরা। মহাবিশ্বের এই রহস্যগুলো নিয়ে নিশ্চয়ই আমাদের কারোই আগ্রহের কোনো কমতি নেই। তাই দেরি না করে ঝটপট দেখে ফেলি এমন জানা-অজানা সাতটি ঘটনা।
১। মহাশূন্যের গন্ধটা কেমন?
কখনো কি মাথায় প্রশ্ন জেগেছে, এই যে মহাশূন্য, তার ঘ্রাণ কেমন? কতিপয় কৌতুহলী মানুষের মনে কিন্তু ঠিকই এই প্রশ্ন জেগেছে! আর তারা বিভিন্ন মহাকাশচারীদের অভিজ্ঞতা শোনার পর এর উত্তর বের করেছেন।
আমরা প্রায় সবাই ওয়েল্ডিঙের কাজের সাথে পরিচিত, তাই না? জ্বী, হ্যাঁ। ওয়েল্ডিঙের কাজের সময় এর আশেপাশে থাকলে যে ঘ্রাণ পাওয়া যায়, মহাশূন্য বা স্পেসের গন্ধটা ঠিক অমন।
২। উত্তপ্ত বরফ
পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৩ আলোকবর্ষ দূরে একটা গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা যার পুরো পৃষ্ঠটাই নাকি “Burning Ice” এ আবৃত! খটকা লাগছে? আসল ঘটনাটা হচ্ছে, এই গ্রহের পৃষ্ঠে প্রচণ্ড চাপের কারণে পানি কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে, আর গ্রহ পৃষ্ঠে তাপমাত্রা অনেক বেশি বলে এই জমাট বরফ থেকে বাষ্প নির্গত হয়। তাই বিজ্ঞানীরা একে বলছেন “Burning Ice”।
৩। পৃথিবীও হতে পারে ব্ল্যাকহোল
আমরা যে সুন্দর পৃথিবীতে বাস করছি, তাও কিন্তু একটা ব্ল্যাকহোলে পরিণত হতে পারে। তবে এর আগে পৃথিবীকে বেশ শক্ত কিছু নিয়ম মানতে হবে। তারই মধ্যে একটি হলো পৃথিবীর নিজেকে কোনোভাবে মিনিমাইজ করে একটা মার্বেলের আকারে পরিণত করতে হবে।
যদি কোনোভাবে এটা হয়ে যায়, তবে পৃথিবীও সর্বগ্রাসী ছোটখাট একটা ব্ল্যাকহোলে পরিণত হতে পারে।
৪। মহাকাশে পানি ফোটানো
সচরাচর পানি ফুটানোর সময় আমরা কী দেখি? বুদবুদ আকারে অনেকগুলো পানির ফোঁটা পাত্রের উপরের দিকে উঠে এসেছে। কিন্তু কেউ যদি মহাকাশে যেয়ে কোনোভাবে পানি ফোটানোর চেষ্টা করে, তাহলে কিন্তু এ ঘটনা ঘটবে না। অনেকগুলোর পরিবর্তে একটামাত্র দানবাকৃতির বুদবুদ উঠে আসবে।
৫। মৃত নক্ষত্র
রাতের পরিষ্কার আকাশে আমরা যে অসংখ্য নক্ষত্র দেখি, তাদের অনেকেই হয়তো মৃত। আলো বিকিরণ করতে করতে, ধীরে ধীরে তারা নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু যদি তারা মৃতই হয়, রাতের আকাশে তাদের দেখি কীভাবে আমরা?
৬। হারিয়ে যাওয়া মহাবিশ্ব
এই যে মহাবিশ্বের বিশালতা নিয়ে আমরা কথা বলছি, মহাবিশ্ব কিন্তু তার চেয়েও বিশাল! বিজ্ঞানীদের মতে মহাবিশ্বের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগই ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি রূপে আছে। আমাদের এই মহাবিশ্ব কিন্তু সম্প্রসারণশীল।
৭। যেখানে শুরু সেখানেই শেষ
কেউ কখনোই মহাবিশ্বের একদম শেষ প্রান্তে চলে যেতে পারবে না। তাই কারো মনে যদি শখ জাগে যে মহাবিশ্বের শেষ মাথায় কী আছে তা দেখার, তার সে আশায় গুঁড়ে বালি। যদি কখনো কেউ এই মহাবিশ্বের একটা নির্দিষ্ট স্থান থেকে সরলরেখা বরাবর হাঁটতে থাকে, তবে অনন্তকাল হাঁটার পর সে আবার তার শুরুর জায়গাতেই ফেরত আসবে।
মহাবিশ্বের বিশালতার মাঝে কত ক্ষুদ্র আমাদের এ পৃথিবী। অথচ এই পৃথিবীর কত রহস্যই এখনো আমাদের অজানা। হয়তো একদিন পৃথিবীর সব রহস্যই সমাধান হবে। এর পাশাপাশি মহাবিশ্বের অসংখ্য অজানা আর অমীমাংসিত রহস্যের জটও খুলতে আরম্ভ করবে।
মানব সভ্যতার বিজয় নিশান পুরো মহাবিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়বে। কে বলতে পারে, তোমরা যারা এ লেখাটি পড়ছ, তোমাদের কেউ একজনই হয়তো একদিন মহাবিশ্বের এমন অজানা কোনো রহস্য সমাধান করে বসলে!
Comments are closed.