বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে নৌকা প্রতীকের আতিকুল ইসলাম
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদের উপনির্বাচনে ১২৯৫ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১২৬ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
বেসরকারি ভাবে ঘোষিত ফলাফলে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। ১২৬ কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ৯৯,২০৫ ভোট।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টি-জাপার লাঙ্গল প্রতীকের শাফিন আহমেদ পেয়েছেন ৩৯৩২ ভোট, আম প্রতীক নিয়ে এনপিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান পেয়েছেন ৭৪২ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭২১ ভোট এবং পিডিপির শাহীন খান বাঘ প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬২ ভোট।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্বাচন উপলক্ষে আজ দুই সিটির পুরো অংশেই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে এলাকায় সব ধরনের যন্ত্রচালিত বাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৭২ জন ও দক্ষিণ সিটিতে ২৪ জন নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রয়েছেন। বিচারিক হাকিম রয়েছেন ২৪ জন।
উত্তরের ১৮টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১৬ প্রার্থী, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪৫ প্রার্থী এবং দক্ষিণের ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৫ প্রার্থী ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর পাশাপাশি উত্তর সিটির ৯ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একজন নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে শুধু মেয়র পদে ভোট হচ্ছে। উত্তর সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩০ ও নারী ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৯১ জন।
উত্তরে বর্ধিত ১৮টি ওয়ার্ডে ভোটার পাঁচ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৭৯ হাজার ৩৫ ও নারী দুই লাখ ৮২ হাজার ৬৪৯ জন। অন্যদিকে, দক্ষিণে বর্ধিত ১৮ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৪৯৭ ও মহিলা দুই লাখ ৪২ হাজার ২৩৮ জন।
ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে এই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল উত্তর সিটির নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন ১৬ জন। এবার প্রার্থী মাত্র পাঁচজন। ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত দলের প্রার্থী ছিল। উত্তরে এবারের উপনির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে মাত্র চারটি দল। আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এর আগে নির্বাচন কমিশন গত বছরের ২৬ জানুয়ারি মেয়র পদে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তার আগেই ওই বছরের ১৪ জানুয়ারি মেয়র পদে উপনির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। দুই সিটির নতুন ৩৬ ওয়ার্ডের নির্বাচনও স্থগিত করেন হাইকোর্ট। গত ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট জানান, নির্বাচনে বাধা নেই। এরপর নির্বাচন কমিশন ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করে তফসিল ঘোষণা করে।
প্রথমবার উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাল-জালিয়াতি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি।
Comments are closed.