বিদেশের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল সুমনের
ক্ষেতে খামারে কাজ করে সংসার আর চলছে না। সামান্য উপার্জনে ৬ জনের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেওয়া যেন দিগন্ত জোড়া এক দীর্ঘশ্বাস। এতো কষ্টের মাঝেও দু’চোখে স্বপ্ন ছিল অবিরত। ছেলে বড় হয়ে প্রবাসে যাবে একদিন সংসারের দায়িত্ব নিবে, সকলের মুখে হাসি ফুটাবে। বাবার স্বপ্ন আর পূরণ করতে পারলো না গরীব বাবার অবলম্বন সুমন চৌধুরী (১৭)। বিদেশে যাওয়ার জন্য মেডিকেল দিয়ে ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল তাঁর স্বপ্ন।
গত রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার সোনাপুর-চেয়ারম্যানঘাট সড়কের ভাটিরটেক এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন চৌধুরী উপজেলার পূর্বচরবাটা ইউনিয়নের পূর্বচরবাটা গ্রামের খালেক মাঝির বাড়ির কৃষক শেখ ফরিদ এর ছেলে। সে পূর্বচরবাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ যাওয়ার জন্য মেডিকেল দিয়ে নোয়াখালী সদর থেকে সিএনজি যোগে বাড়ি ফিরছিল সুমন। একই সময় সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনও একটি মাইক্রোবাস যোগে সদর থেকে ফিরছিলেন। পথে ভাটিরটেক এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যান মাইক্রোবাসটির সামনে হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে গেলে মাইক্রোবাসটিও দাঁড়িয়ে যায়। এসময় পিছনে থাকা সিএনজি’টি সজোরে এসে মাইক্রোবাসটির সাথে ধাক্কা লেগে উল্টে গেলে ঘটনাস্থলে সুমন নিহত ও ইভা আক্তার (১৬) নামের হাতিয়ার এক যাত্রী আহত হয়।
সুমনের বাবা শেখ ফরিদ জানান, সুমনের জন্য সৌদি আরবের একটি ভিসা পেয়েছিলাম। সকালে মেডিকেল দেওয়ার জন্য সে বাড়ি থেকে বের হয়, আর এখন লাশ হয়ে সে বাড়িতে ফিরেছে। সুমনকে হারিয়ে আমি আজ বড়ই নি:স্ব হয়ে গেলাম। আমার দায়িত্ব নেওয়ার মতো আর কেউ রইল না।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় সুমনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Comments are closed.