ফেনীতে ছাত্রীর গায়ে আগুন দেওয়া চারজনই ছিল বোরকা পরা

0 164

ফেনীর সোনাগাজীতে এক পরীক্ষার্থীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া চার দুর্বৃত্তই ছিল বোরকা পরা। এ কারণে তিনি কাউকেই চিনতে পারেননি। তবে চারজনের মধ্যে একজন নারীকণ্ঠে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে। বাকি তিনজন কোনো কথা বলেনি। ওই পরীক্ষার্থী এবার আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন।

ওই পরীক্ষার্থী ভাই আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সামনে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ঘটনার পর তাঁর বোন তাঁদের এ কথা জানিয়েছেন। অগ্নিদগ্ধ ওই পরীক্ষার্থী বর্তমানে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

ওই পরীক্ষার্থীর ভাই বলেন, ঘটনার পর তাঁর বোন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছু কথা বলেন। বোনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার পর একজন পরীক্ষার্থী তাঁকে বলে, তাঁর এক বান্ধবীকে কারা যেন ছাদে মারধর করছে। এটা শুনে তাঁর বোন ছাদে যায়। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, বোনের কথা শুনে মনে হয়েছে, বোরকা পরা চারজন মিলে তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর যে তাঁকে ছাদে যেতে প্রলুব্ধ করেছে, সেও এদের সঙ্গে যুক্ত। তবে এদের পরিচয় জানা যায়নি। এরা নারীর বেশ ধরে পুরুষও হতে পারে বলে তাঁর ধারণা।

ওই পরীক্ষার্থীর ভাইয়ের দাবি, ২৭ মার্চের ঘটনার জের ধরে সোনাগাজীর একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তাঁর লোকজন দিয়ে আজকের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ওদিন ওই অধ্যক্ষ মাদ্রাসার নিজ কক্ষে তাঁর বোনকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। রাজি হলে আলিম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগে দেওয়া হবে বলে অধ্যক্ষ উল্লেখ করেন। এ ঘটনায় মামলা হওয়ায় অধ্যক্ষ এখন কারাগারে আছেন।

২০১৬ সালে দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার সময়ও এলাকার দুর্বৃত্তরা ওই পরীক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছিল। সেবার মেয়েটির চোখে চুন মারা হয়। এতে তাঁর ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে আজকের ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সেটি ওই পরীক্ষার্থীর ভাই বুঝতে পারছেন না।

অগ্নিদগ্ধ শিক্ষার্থীর আত্মীয়রা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জানান, মেয়েটি যে মাদ্রাসায় পড়েন, সেখানে অধ্যক্ষ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন। এর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা পরিচালন কমিটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তবে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঘটনাটি পুলিশ খুব গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা তদন্ত করে বের করা হবে। ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।