নোয়াখালী সদর হাসপাতাল যেন ময়লার ভাগাড়
আরএমও বলেছেন, রোগীদের সচেতন হতে হবে
ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় অবাধে গরু-ছাগলের বিচরণ। এছাড়া প্রবেশমুখেই সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত রিকশার জট। এসব কিছুরই দেখা মিলবে নোয়াখালী সরকারি জেনারেল হাসপাতালে। বাইরের মতো ভেতরের চিত্রও ভয়াবহ। পরিষ্কার করা হয় না টয়লেট, ভাঙাচোরা অবস্থা আসবাবপত্রেরও। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথা স্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত উন্নতির আশ্বাসও দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান ফটকে ঢুকতেই চোখে পড়বে ময়লার স্তুপ। একই অবস্থা হাসপাতালের ভেতরেও। প্রত্যেকটি ভবনের জানালার নিচে আবর্জনা। ভবন ঘেঁষেই পড়ে আছে ভাঙা-চোরা বেড, এসি কাভারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের পরিত্যাক্ত অংশ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিণত হয়েছে পুরো হাসপাতাল। এতে হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
এদিকে, হাসপাতালের প্রধান ফটক টপকিয়ে ভেতরে ঢুকলেই সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং অ্যাম্বুলেন্সের স্ট্যান্ড। হাসপাতাল ভবন ও প্রাঙ্গণে বিচরণ করছে গরু-ছাগল। যেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে গোবর।
শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি এক শিশুর অভিভাবক বলেন, ওয়ার্ডের টয়লেটগুলো খুবই নোংরা। পুরুষ ওয়ার্ডের একজন রোগীর স্বজন বলেন, টয়লেটে ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের বোতল কেটে রাখা হয়েছে। যা ব্যবহার করা মুসকিল।
হাসপাতাল এলাকা ও সংলগ্ন মাইজদী হাউজিং স্টেট এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পুরো হাসপাতালই অস্বাস্থ্যকর। পুরাতন ভবনের মেঝেতে বৃষ্টির পানি জমে আছে। ওষুধের স্টোরে পানি জমে ওষুধও নষ্ট হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য সরকারিভাবে ও ঠিকাদারের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৭০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছেন। তাদের দেখার জন্য হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারও আছেন।
হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথা স্বীকার করেছেন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম। তিনি বলেন, জনবল সংকটের কারণে মূলত এ অবস্থা। পাশাপাশি দোষারপ করেন গ্রাম থেকে আসা রোগীদের। তার দৃষ্টিতে রোগীরা যদি আরেকটু সচেতন হতেন, তাহলে এত খারাপ অবস্থা থাকতো না।
তিনি বলেন, একাধিকবার গরু-ছাগল আটক করে থানায় দিয়ে আসা হয়েছে। এক পর্যায়ে গরু-ছাগলের মালিকরা থানায় মুসলেকাও দিয়ে বলেছেন তাদের গরু আর ভেতরে ঢুকবে না। অথচ এত কিছুর পরও তারা একই কাজ করছে। এছাড়া সিএনজিসহ অন্যান্য স্ট্যান্ড যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও তোয়াক্কা করছে না কেউ। এজন্য তিনি সবার সচেতনতাসহ সমাজের বিশিষ্ট বক্তিদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
Comments are closed.