নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে হাতি দিয়ে অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজি!
নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে হাতি দিয়ে অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে শহর, বন্দর, গ্রামগঞ্জের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। হয়রানি থেকে রক্ষার্থে হাতির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।
অভিযোগে জানা গেছে, এক শ্রেণীর প্রতারকচক্র পাহাড়ী কোন হাতির মালিককে ভাড়া করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ শহরে ঘুরে বেড়ায়। চালায় দেদারছে চাঁদাবাজি। এ সময় তারা ব্যবসায়ীদের অনেকটা জিম্মি করে ১০ টাকা থেকে শুরু করে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। টাকা দিতে না চাইলে হাতির শুড় দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল নষ্ট করার চেষ্টা করে। তাদের অত্যাচারে জেলার সদর, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্নচর, কবিরহাট, হাতিয়া, সেনবাগ, চাটখিল ও সোনাইমুড়ী উপজেলা সদরসহ বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক শহর চৌমুহনীর সাধারণ ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। অনেক সময় তারা পথচারিদের পথরোধ করেও টাকা আদায় করে।
শুধু তাই নয়, বড়সড় একটি হাতি প্রধান সড়কের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রেখে যানবাহন থেকেও চাঁদাবাজি করা হয়। এতে অনেক সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে দূর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ। তাছাড়া এসব হাতি এলোপাতাড়িভাবে সাধারণ মানুষের কলাগাছসহ বিভিন্ন গাছ খেয়ে ফেলে। এতে কিছুই করার থাকেনা ভুক্তভোগীদের।
জেলা শহর মাইজদী হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী রহিম বক্স অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দাভাব বিরাজ করছে। অনেক সময় দোকানে সারা দিন বিক্রিই হয়না। সন্ধ্যার সময় হাতি এসে হাজির। টাকা দিতেই হবে, না দিলে শুড় দিয়ে দোকানের মালামাল ক্ষতিসহ নানা ভাবে নাজেহাল হতে হয়। এ বিষয়ে জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে জানালেও কোন লাভ হয়না।
একই কথা জানালেন চৌমুহনীর কমিরপুর রোর্ডে সমবায় মার্কেটের ইলেট্রনিক্স ব্যবসায়ী হাসমত উল্যাহ ও পূর্ব বাজারের রড, সিমেন্ট ব্যবসায়ী ফোরকান আলী।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ জানান, হাতি নিয়ে কেউ টাকার জন্য আসলে না দিলেই হলো। এ বিষয়ে অনেকে মৌখিকভাবে আমাদের জানালেও লিখিতভাবে কেউ জানাচ্ছেনা। ফলে আমরা ইচ্ছা থাকা শর্তেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছিনা।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তম্ময় দাস বলেন, মাঝে মধ্যে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। কিন্তু আমাদের প্রশাসনিক লোকজন চাঁদাবাজির স্থলে যাওয়ার আগেই প্রতারকরা হাতি নিয়ে সটকে পড়ে। ফলে তাদের হাতে নাতে ধরা যায়না। তবে চাঁদাবাজিকালে হাতিসহ তাদের ধরতে পারলে মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়ার একটা সুযোগ রয়েছে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।
Comments are closed.