গালি দেওয়ার কারন জিজ্ঞেস করায় বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে ছাত্র হত্যা
চালক ও সহকারীর বরাত দিয়ে পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শনিবার বিকেলে নবীগঞ্জের টোলপ্লাজা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিকৃবির কয়েকজন ছাত্র উদার পরিবহনে বাসে ওঠেন।
এসময় সহকারী মাসুক তাদের কাছে ১০০ টাকা ভাড়া দাবি করলে ওয়াসিম ও তার বন্ধুরা ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দেওয়ার কথা জানান। এতে সহকারী মাসুক ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করেন।
‘একপর্যায়ে ছাত্ররা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে নেমে যান। বাস থেকে নামার সময় পেছন থেকে ওই বাসের সহকারী তাদের গালি দেন।
এসময় ওয়াসিম বাসের সিঁড়িতে উঠে কেন গালি দিলেন জিজ্ঞেস করছিলেন। এসময় চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন।
ঠিক তখনই সহকারী মাসুক ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দিলে বাসের পেছনের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন।
পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
এএসপি আনোয়ার আরও বলেন, নিহত ওয়াসিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা দাফন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
মামলা করবে কিনা তা নিশ্চিত না। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে না চাইলে, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ছাত্র ওয়াসিম আব্বাস ঘুড়ি (২১) বাসচাপায় হত্যার অভিযোগে উদার পরিবহনের সেই বাসচালক জুয়েল আহমদ (৩১) ও হেলপার (সহকারী) মাসুক মিয়াকে (৩২) আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার চালক জুয়েল আহমদ ও রাত ২টার দিকে সহকারী মাসুককে পৃথক স্থান থেকে আটক করে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ।
আটক বাস চালক জুয়েল আহমদ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বারউড়া এলাকায় হিরণ মিয়ার ছেলে। তিনি সিলেট কদমতলীতে ভাড়া বাসায় থাকেন।
সহকারী মাসুক সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ঝাউয়া এলাকায় দৌলত মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ঘাতক বাস ও অভিযোক্তদের মৌলভীবাজার মডেল থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল হক বলেন, এ ঘটনার পর রাতেই মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ।
স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে চালক ও সহকারীকে আটক করে। আটকের পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এর আগে শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুরে বাকবিতণ্ডার জেরে ওয়াসিম আব্বাস ঘুড়িকে বাসচাপা দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠে।
নিহত ওয়াসিম হবিগঞ্জের নবিগঞ্জ উপজেলার রুদ্রগ্রাম এলাকার মাহবুব ঘুড়ির ছেলে। তিনি সিকৃবি’র মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
Comments are closed.