ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে বিএনপির ভিশন-২০৩০

116
ছবি – সারাবাংলা.নেট

কারাবন্দির ৯ মাস আগে ২০১৭ সালের ১০ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া ভিশন ২০৩০-এর আলোকেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনি ইশতেহার তৈরি হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১১ দফা লক্ষ্য— যা তারা ফ্রন্ট গঠনের সময় জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন। পাশাপাশি ২০ দলীয় জোটের শরিকদলগুলোর পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলোও স্থান পাচ্ছে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যৌথ ইশতেহারে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার কমিটির প্রথম বৈঠক হয় রাজধানীর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে অংশ নেওয়া দলগুলোর প্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব তুলে ধরেন। আগামী রোববার এ ব্যাপারে আবার বৈঠক হবে। সেখানে চূড়ান্ত করা হবে খসড়া প্রস্তাব। এরপর তা পাঠানো হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে। সেখানে আরেকটি পরিমার্জিত খসড়া তৈরির পর তা দেওয়া হবে বিএনপিকে। বিএনপি সেটি নিয়ে ২০ দলের সঙ্গে আলোচনা করবে। পরে সেটি বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা চূড়ান্ত করে জাতির সামনে তুলে ধরবেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার কমিটির প্রথম বৈঠকে যেসব প্রস্তাব এসেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো— পর পর দু’বার কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত দেওয়ার সুযোগ (ফ্লোর ক্রসিং) দেওয়া হবে, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ছাড়া চাকরিতে ঢোকার ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমা থাকবে না, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া সব উন্নয়ন প্রকল্পের ‘দুর্নীতির’ খতিয়ান তুলে ধরে তার বিচারের ব্যবস্থা করা হবে, ইউটিলিটি সার্ভিস, যেমন—গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত কমানো হবে এবং এর ওপরে যাদের তাদের বাড়ানো হবে না, সবার জন্য রেশনিং পদ্ধতি চালু করা হবে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হবে না, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট এবং প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দফতরে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার কমিটির বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। বিএনপির পক্ষে তিন পৃষ্ঠার লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

এ প্রস্তাবের অন্যতম হচ্ছে— পুলিশ ও সেনাবাহিনী ছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমা থাকবে না। যে কেউ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ঢুকতে পারবেন। বিএনপির লিখিত প্রস্তাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— পর পর দুইবার কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।

এছাড়া বিএনপির প্রস্তাবে সাংবিধানিক সংস্কার, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, বেকারত্ব কমানো, উন্নয়নের সুষম বণ্টন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত, জাতীয় নেতাদের মর্যাদা নিশ্চিত, মেগা প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখা, নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন, কোটা সংস্কার, সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের সরকারি চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা, রাজনীতিতে অতীতমুখিতা বা প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে নতুন ধারার সৃষ্টি, সংসদকে সব কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা, প্রশাসনে আমূল পরিবর্তন আনা, সুশাসন, সুনীতি ও সুসরকারের (থ্রিজি) সমন্বয় ও বৃহত্তর জনগণের সম্মিলনের মাধ্যমে ‘ইনক্লুসিভ সোসাইটি’গড়া, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে দলীয়করণের অবসান ঘটিয়ে মেধা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, শিক্ষা ও কৃষিখাতে যুগোপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা, বাস্তবমুখী শিক্ষাব্যবস্থা, খেলায় শতভাগ মনোযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে খেলোয়াড়দের আর্থিক বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

বিএনপির প্রস্তাবে আরও রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা, ৫০০ ইউনিট যারা ব্যবহার করে তাদের বিল কমানো আর অন্য যারা এর ওপরে ব্যবহার করবে সেটি যাতে না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখা, সবার জন্য রেশনিং কার্ড চালু করা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা ইত্যাদি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উল্লেখিত এ প্রস্তাবগুলোর বেশিরভাগই দেড় বছর আগে দেওয়া খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০-তে রয়েছে। ৩৭টি অনুচ্ছেদে ভাগ করা ৪১ পৃষ্ঠার ভিশন ২০৩০’তে প্রত্যেকটা বিষয় আলাদা আলাদা করে বলা হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার কমিটিতে বিএনপির প্রতিনিধি সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর প্রস্তাবে ভিশন ২০৩০-ই ঘুরে ফিরে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০৩০ এর আলোকেই আমাদের ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে। তবে ইশতেহার তৈরির ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটের প্রস্তাবগুলো সমন্বয় করা হবে। এর বাইরে থেকেও যদি ভালো কোনো পরামর্শ আসে, সেগুলো বিবেচনা করা হবে। তবে ফোকাস লাইনটা থাকবে বিএনপির চেয়ারপারসনের দেওয়া ভিশন-২০৩০।’

সুত্র : সারাবাংলা.নেট

আরও পড়ুন

নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন সহকারী প্রোগ্রামার,ইউআইটিআরসিই, ব্যানবেইস মো.জহির উদ্দিন।

নারায়নপুর আর কে উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি গঠন,আবু তালেব সদস্য নির্বাচিত

এ সময় বক্তারা আদালতের রায় ও ডাক্তারের চিকিৎসা পত্র বাংলা ভাষায় লিপিবদ্ধ করার জন্য জোরালো দাবি জানান।

চাটখিল কামিল মাদ্রাসায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

অল্পদিনের মধ্যেই এখানকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো অন্যায়, অবিচার, অনিয়ম ও চাঁদাবাজ আমার কাছে প্রশ্রয় পাবে না।

নিজ এলাকায় জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন এইচ এম ইব্রাহিম এমপি

মফস্বলে সাংবাদিকতা করা একটা চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম।

মফস্বল সাংবাদিকতা করা একটা চ্যালেঞ্জ – এইচ এম ইব্রাহিম

Comments are closed.