এক প্রতিবন্ধী রবিউলের কথা

তার পিতা ও বড় বোন ৩ জনই প্রতিবন্ধী। রবিউলকে দেখতে মনে হয় বড় আলেম বা কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। আসলে তার কোনটিই নয়। হয়তো পরিবার বা কাহারো দেয়া জামা কাপড় পড়লে তাকে এমন দেখা যায়। অসহায় এক মা স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের সাহার্য্যে এগিয়ে আসেনি কেউ।

0 110

সেনবাগের ডমুরুয়া ইউপির নলুয়া গ্রামের রবিউল (২২), তার পিতা ও বড় বোন ৩ জনই প্রতিবন্ধী। রবিউলকে দেখতে মনে হয় বড় আলেম বা কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। আসলে তার কোনটিই নয়। হয়তো পরিবার বা কাহারো দেয়া জামা কাপড় পড়লে তাকে এমন দেখা যায়। অসহায় এক মা স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের সাহার্য্যে এগিয়ে আসেনি কেউ। দুবছর আগে গাজীরহাটে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের জরিপকাজ এবং মোবাইল থেরাপি ভ্যান কার্যক্রমে আমি পরিবারটিকে আবিস্কার করি। একই পরিবারে ৩ জন প্রতিবন্ধী অথচ তারা সরকারি ভাতা বা সাহায্য থেকে বঞ্চিত। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে একজন নগন্য সমাজকর্মী ও সংবাদকর্মী হিসেবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাঁদের পাশে দাঁড়াবার। ‘এক পরিবারে ৩ জন প্রতিবন্ধী’ শিরোনামে সংবাদ প্রচার করি। এতেই প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদের টনক নড়ে। আমার লেখনিতে গত মাসে ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ওই পরিবারের (মেয়েটি) একজনকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় এনেছে। খবরটি শুনে সত্যিই আমি অভিভূত হয়েছি। ধন্যবাদ চেয়াম্যান সাখাওয়াত হোসেনকে। এরপর থেকে প্রতিবন্ধী রবিউল এমন সাজে প্রায় সময়ই চলে আসে আমার বাড়িতে। আসলে তার কোন হিতাহিত জ্ঞান নেই – এসেই ডাক দেয় আউয়াল সাব আছেন। দরজা পিটায়। একসময় ঘরে ঢুকে পড়ে। তাকে শান্ত¦না দিয়ে নাস্তা বা গাড়ি ভাড়া দিয়ে রাস্তায় তুলে দিই। হয়তো সে বাড়ি না গিয়ে চলে যায় অন্য কোন স্থানে। এমন ঘটনা ও ঘটেছে উৎসুক যুবকরা তাকে পিটিয়ে জখমও করেছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় আমার বাড়িতে হাজির রবিউল। আমার স্ত্রী তাকে নাস্তা ও কিছু টাকা দিয়ে আমার সাথে সাক্ষাত করায়। সে আবোল তাবোল কথা বলে জানান দেয়, আমিকি ভাতা পাবোনা……..? মাঝে মাঝে চমৎকার হাসি। আমিও তাকে ক্যামেরাবন্দি করি। পরে তাকে কিছু টাকা দিয়ে রাস্তায় ওঠিয়ে দিই। আজ নলুয়া গ্রামের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ওবায়দুল হককে তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী রবিউলকে কাদরা বোর্ড অফিসের দক্ষিণে দ্রুতগতির একটি সিএনজি চাপা দেয়। এতে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। আসলে খবরটি শুনে আমি স্তব্ধ হয়েছি। সমাজে অনেক রবিউল আছে অসহায়ত্ব নিয়ে। প্রতিবন্ধীরাও মানুষ তাদের কল্যাণে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত। তাঁর সুস্থ্যতা কামনা করছি।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।